ওয়ারফেজ
সত্য
ডেডলাইন মিউজিক
১৯ অক্টোবর ২০১২
প্রকাশনা অনুষ্ঠান ২১ অক্টোবর ২০১২
রোববার, সন্ধ্যা ছয়টা। ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ষষ্ঠ তলায় ভীষণ হট্টগোল। ভিড় থেকে একেকজন বেরিয়ে আসছেন মুখে বড় হাসি নিয়ে; হাতে সত্য। ওয়ারফেজের এই নতুন অ্যালবাম সিডি আকারে প্রকাশের দিন ছিল এমনই হট্টগোলময়। অ্যালবামটি এসেছে ডেডলাইন মিউজিকের ব্যানারে।
‘আমরা এতটা আশা করিনি! সত্যি সত্যিই হাজারের ওপর শ্রোতা এসেছিলেন অ্যালবামটি কিনতে! কথা ছিল, রাত আটটা পর্যন্ত থাকব আমরা। কিন্তু দর্শকের চাপ সামলাতে না পেরে সন্ধ্যা সাতটায় দোকান বন্ধ করতে হয়েছে!’ বলছিলেন ওয়ারফেজের দলনেতা টিপু। ভোকাল মিজান বাদে দলের আর সবাই ছিলেন সত্য প্রকাশের সময়। ভক্তদের অটোগ্রাফ দেওয়ার পাশাপাশি একটি ব্যাকপ্যাক, পোস্টার ও টি-শার্টও উপহার দিয়েছেন তাঁরা। দর্শকের এই বিপুল সাড়ায় উচ্ছ্বসিত ব্যান্ডের সবাই।
টিপু বললেন, ‘শ্রোতাদের এই ভালোবাসা পেয়ে আমরা আনন্দিত।’
ইস্কাটন গার্ডেন রোডে তখন সন্ধ্যা। বিদ্যুতের লুকোচুরি। দেয়ালে বেড়ে ওঠা পাতাবাহারগাছে বাতাস খেলে যাওয়ার আবছা দৃশ্য। দারুণ নিরিবিলি এক পরিবেশ। ততোধিক নিরিবিলি ওয়ারফেজের প্র্যাকটিস-প্যাড। ভেঙে বললে, যে জায়গায় ২৯ বছরের পুরোনো এই ব্যান্ডের সদস্যরা অনুশীলন করেন, গান বাঁধেন আর সুর করেন, সেখানে হাজির ব্যান্ডটির ড্রামার ও দলনেতা টিপু। সঙ্গে দলটির কনিষ্ঠ সদস্য অনি। প্রথম দেখাতেই মনে হলো, ব্যান্ডটির আপাদমস্তক দেখে ফেললাম আমরা! সবচেয়ে পুরোনো ও নতুন সদস্য দুজন আমাদের সামনে। বাকিরা তখনো হয়তো পথে, যানজটের কবলে!
আমাদের প্রথম প্রশ্ন, এত দেরি হলো কেন? প্রশ্নটি ওয়ারফেজের নতুন অ্যালবাম সত্যকেন্দ্রিক। নয় বছর পর নিজেদের সপ্তম অ্যালবাম মুক্তি দিল ওয়ারফেজ! দলনেতা টিপু বলেন, ‘অ্যালবামটির কাজ আসলে আমরা ২০০৭-০৮ সালে শুরু করি। তখন আমাদের ভোকাল মিজান আবার ফিরে এসেছিলেন দলে।’
তার মানে প্রায় চার বছর ধরে সত্যর গানগুলো বেঁধেছে ওয়ারফেজ! বাংলাদেশে হার্ড রক ও হেভি মেটাল ঘরানার পথিকৃৎ বলা হয় দলটিকে। এবারের গানগুলোও নিশ্চয়ই একই ধাঁচের? নতুনত্ব আছে কি কোনো? অনি বললেন, ‘আছে।’ আবার বললেন টিপু, ‘আমরা সব সময় সবার জন্যই গান করেছি। তবে এবার আমাদের গানগুলো কেবল নতুন প্রজন্মের জন্যই। আমরা আমাদের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করেছি নয়টি গানে।’
সত্য প্রকাশিত হয়েছে বাংলালিংকের মিউজিক স্টেশনের মাধ্যমে। এরই মধ্যে অনেক তরুণই গানগুলো শুনেছেন। টিপু বললেন, ‘অনেকের কাছ থেকে বেশ প্রশংসা পাচ্ছি আমরা।’
২০১৩ সালে ৩০ বছরে পা দেবে ওয়ারফেজ। নিজেদের মূল্যায়ন নিজেরা কীভাবে করবেন? টিপু মাথা ঝাঁকান, ‘নিজেদের মূল্যায়ন আসলে কীভাবে করব! এটা তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা ঠিক, আমরা সবাই এক নীতিতে বিশ্বাসী—আমাদের পছন্দ না হলে কোনো গান শ্রোতাদের সামনে উপস্থাপন করি না। এ কারণেই খেয়াল করবেন, আমাদের প্রতিটি অ্যালবামই জনপ্রিয় হয়েছে। অনেকেই ভাবে, একটা অ্যালবামে দু-একটা গান ভালো হলেই হলো। ওয়ারফেজ এতে বিশ্বাসী নয়।’
বিশ্বাসের জায়গাটায় মিল থাকলেও ওয়ারফেজের পথ মসৃণ ছিল না কখনোই! নানা চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে তিন দশকে। বিশেষ করে ভোকাল নিয়ে ছিল এই সমস্যা। তবে ওয়ারফেজের লাইনআপ এখন বেশ স্থির। দলনেতা টিপু আছেন ড্রামসে, মিজান ভোকাল, অনি বাজান গিটার, বেস নিয়ে আছেন রজার, কি-বোর্ডে শামস আর গিটারে কমল। তবে কমল এখন অসুস্থতার কারণে বিশ্রামে আছেন। টিপু বললেন, ‘দুই-তিন মাসের মধ্যেই কমল আমাদের মাঝে ফিরে আসবে, আশা করি। আর আমাদের অ্যালবামটি সিডি আকারে প্রকাশিত হবে আগামী কোরবানির ঈদের আগে। শ্রোতারা গানগুলো ভালোভাবে শোনার অপেক্ষায় আছেন। নিজেদের দর্শন ঠিক রেখে সময়ের সঙ্গে চলার চেষ্টা করি আমরা। এবারের গানগুলো নিশ্চয়ই তরুণদের ভালো লাগবে।’
তরুণদের ভালো লাগবে, তরুণদের গাওয়া গান কেমন লাগে আপনাদের? বিশেষ করে তরুণদের হার্ড রক ঘরানার গান? টিপুকে দারুণ উচ্ছ্বসিত মনে হলো, ‘অবশ্যই ভালো। তবে এখনকার তরুণদের জন্য একটাই পরামর্শ, ভালো গান করতে হবে—সেটা যেভাবেই করেন না কেন।’ সঙ্গে অনি যোগ করলেন, ‘আসলে সব ব্যান্ডে একজন করে টিপু ভাই দরকার। যিনি ব্যান্ডটিকে ধরে রাখবেন।’ আমরা অনির এই মন্তব্যের সঙ্গে যোগ করে টিপুর কাছে জানতে চাই, ওয়ারফেজকে কীভাবে আগলে রাখলেন আপনি? রহস্যটা কী? টিপু কিছুটা সময় নিয়ে উত্তর দিলেন, ‘১৯৯৪ সালে আমাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম অবাক ভালোবাসা প্রকাশিত হওয়ার পর খুব খারাপ একটা সময় গিয়েছিল। তখন বলেছিলাম, কেউ থাকুক না থাকুক, আমি এই ব্যান্ড চালিয়ে নিয়ে যাব। আমি কেবল সমন্বয় করেছি। বাকি সবার সহযোগিতা না পেলে তো এটা সম্ভব ছিল না। একেকজনের দর্শন একেক রকম। এটা বোঝা খুব জরুরি। এটা বুঝে সবকিছু সমন্বয় করাটাই মূল কথা। ঠিক রহস্য নয়, এটা তো সবাই জানেন!’
সূত্র: মাহফুজ রহমান, প্রথম আলো
আমাদের প্রথম প্রশ্ন, এত দেরি হলো কেন? প্রশ্নটি ওয়ারফেজের নতুন অ্যালবাম সত্যকেন্দ্রিক। নয় বছর পর নিজেদের সপ্তম অ্যালবাম মুক্তি দিল ওয়ারফেজ! দলনেতা টিপু বলেন, ‘অ্যালবামটির কাজ আসলে আমরা ২০০৭-০৮ সালে শুরু করি। তখন আমাদের ভোকাল মিজান আবার ফিরে এসেছিলেন দলে।’
তার মানে প্রায় চার বছর ধরে সত্যর গানগুলো বেঁধেছে ওয়ারফেজ! বাংলাদেশে হার্ড রক ও হেভি মেটাল ঘরানার পথিকৃৎ বলা হয় দলটিকে। এবারের গানগুলোও নিশ্চয়ই একই ধাঁচের? নতুনত্ব আছে কি কোনো? অনি বললেন, ‘আছে।’ আবার বললেন টিপু, ‘আমরা সব সময় সবার জন্যই গান করেছি। তবে এবার আমাদের গানগুলো কেবল নতুন প্রজন্মের জন্যই। আমরা আমাদের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করেছি নয়টি গানে।’
সত্য প্রকাশিত হয়েছে বাংলালিংকের মিউজিক স্টেশনের মাধ্যমে। এরই মধ্যে অনেক তরুণই গানগুলো শুনেছেন। টিপু বললেন, ‘অনেকের কাছ থেকে বেশ প্রশংসা পাচ্ছি আমরা।’
২০১৩ সালে ৩০ বছরে পা দেবে ওয়ারফেজ। নিজেদের মূল্যায়ন নিজেরা কীভাবে করবেন? টিপু মাথা ঝাঁকান, ‘নিজেদের মূল্যায়ন আসলে কীভাবে করব! এটা তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা ঠিক, আমরা সবাই এক নীতিতে বিশ্বাসী—আমাদের পছন্দ না হলে কোনো গান শ্রোতাদের সামনে উপস্থাপন করি না। এ কারণেই খেয়াল করবেন, আমাদের প্রতিটি অ্যালবামই জনপ্রিয় হয়েছে। অনেকেই ভাবে, একটা অ্যালবামে দু-একটা গান ভালো হলেই হলো। ওয়ারফেজ এতে বিশ্বাসী নয়।’
বিশ্বাসের জায়গাটায় মিল থাকলেও ওয়ারফেজের পথ মসৃণ ছিল না কখনোই! নানা চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে তিন দশকে। বিশেষ করে ভোকাল নিয়ে ছিল এই সমস্যা। তবে ওয়ারফেজের লাইনআপ এখন বেশ স্থির। দলনেতা টিপু আছেন ড্রামসে, মিজান ভোকাল, অনি বাজান গিটার, বেস নিয়ে আছেন রজার, কি-বোর্ডে শামস আর গিটারে কমল। তবে কমল এখন অসুস্থতার কারণে বিশ্রামে আছেন। টিপু বললেন, ‘দুই-তিন মাসের মধ্যেই কমল আমাদের মাঝে ফিরে আসবে, আশা করি। আর আমাদের অ্যালবামটি সিডি আকারে প্রকাশিত হবে আগামী কোরবানির ঈদের আগে। শ্রোতারা গানগুলো ভালোভাবে শোনার অপেক্ষায় আছেন। নিজেদের দর্শন ঠিক রেখে সময়ের সঙ্গে চলার চেষ্টা করি আমরা। এবারের গানগুলো নিশ্চয়ই তরুণদের ভালো লাগবে।’
তরুণদের ভালো লাগবে, তরুণদের গাওয়া গান কেমন লাগে আপনাদের? বিশেষ করে তরুণদের হার্ড রক ঘরানার গান? টিপুকে দারুণ উচ্ছ্বসিত মনে হলো, ‘অবশ্যই ভালো। তবে এখনকার তরুণদের জন্য একটাই পরামর্শ, ভালো গান করতে হবে—সেটা যেভাবেই করেন না কেন।’ সঙ্গে অনি যোগ করলেন, ‘আসলে সব ব্যান্ডে একজন করে টিপু ভাই দরকার। যিনি ব্যান্ডটিকে ধরে রাখবেন।’ আমরা অনির এই মন্তব্যের সঙ্গে যোগ করে টিপুর কাছে জানতে চাই, ওয়ারফেজকে কীভাবে আগলে রাখলেন আপনি? রহস্যটা কী? টিপু কিছুটা সময় নিয়ে উত্তর দিলেন, ‘১৯৯৪ সালে আমাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম অবাক ভালোবাসা প্রকাশিত হওয়ার পর খুব খারাপ একটা সময় গিয়েছিল। তখন বলেছিলাম, কেউ থাকুক না থাকুক, আমি এই ব্যান্ড চালিয়ে নিয়ে যাব। আমি কেবল সমন্বয় করেছি। বাকি সবার সহযোগিতা না পেলে তো এটা সম্ভব ছিল না। একেকজনের দর্শন একেক রকম। এটা বোঝা খুব জরুরি। এটা বুঝে সবকিছু সমন্বয় করাটাই মূল কথা। ঠিক রহস্য নয়, এটা তো সবাই জানেন!’
সূত্র: মাহফুজ রহমান, প্রথম আলো