ব্যান্ডের গানের গল্প
সব বয়সের, সব শ্রোতার প্রিয় এই গানের শিল্পী হ্যাপী আখান্দ ও গীতিকার এস এম হেদায়েত; দুজনেরই কেউ আজ বেঁচে নেই। আছেন এ গানের সুরকার লাকী আখান্দ। কীভাবে গানটির সৃষ্টি হলো—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের দিকের কথা। নওগাঁর এক জমিদার ছিলেন মামুনাল চৌধুরী। আমরা তাঁকে “রাজা” ভাই বলে ডাকতাম। তিনি এখন বেঁচে নেই। রাজা ভাইয়ের স্ত্রী গান করতেন। তাঁর জন্য চারটি গান করেছিলাম। একবার রাজা ভাইয়ের আমন্ত্রণে গীতিকার এস এম হেদায়েত (প্রয়াত) আর আমি গেলাম নওগাঁয়। সারা দিন বাড়িতে বন্দী আমরা। কোথাও যেতে পারছি না। রাজা ভাইকে বলে রিকশায় বেড়াতে বের হলাম আমরা দুজন। চকঘুড়িয়া আর হাপুনিয়ার মাঝে জমিদার বাড়ি। আমরা রিকশায় যাচ্ছি। চারদিকে ধানখেত। মাঝখানে রাস্তা। চোখজুড়ানো প্রকৃতির রূপ। হেদায়েতকে বললাম গান লিখতে। সে বলল, “কী লিখব?” তারপর চুপ। হঠাত্ই বলল, “পেয়েছি, আবার এল যে সন্ধ্যা শুধু দুজনে।” প্রথম লাইন শুনে আমার খুব একটা ভালো লাগল না। পাত্তা দিলাম না। একটু পর বলল দ্বিতীয় লাইন—“চলো না ঘুরে আসি অজানাতে। যেখানে নদী এসে থেমে গেছে।” বললাম গানটা শেষ করতে। দুই চোখ ভরে দেখা প্রকৃতির রূপটাই এ গানে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন হেদায়েত।
ঢাকায় ফিরে গীতিকবিতাটি রক এন রোল রিদমের ওপর সুর করলাম। হ্যাপী গানটা তুলে নিল। তারপর একদিন শুনলাম, ও আমাকে না জানিয়েই গানটা রেকর্ড করে ফেলেছে। হ্যাপী বলল, “ভাইয়া, টিভিতে নওয়াজিশ আলী খানের প্রযোজনায় ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে তিনটা গান গাইতে হবে। দুটি গান আছে (কে বাঁশি বাজায় রে, এই পৃথিবীর বুকে আসে যারা)। আরেকটা গান দরকার, তাই তোমার এই গানটাও করে ফেললাম। এরপর আমি গানটা শুনি। শুনে আমি মুগ্ধ, যদিও গানটির রিদম প্যাটার্ন (আঙ্গিক) বদলে ফেলেছিল হ্যাপী। টিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর গানটি জনপ্রিয় হয়ে যায়। পরে হ্যাপীর গাওয়া ওই গানটিই আমি সালাউদ্দিন জাকীর ঘুড্ডি ছবিতে ব্যবহার করি।’
- কবির বকুল
ঢাকায় ফিরে গীতিকবিতাটি রক এন রোল রিদমের ওপর সুর করলাম। হ্যাপী গানটা তুলে নিল। তারপর একদিন শুনলাম, ও আমাকে না জানিয়েই গানটা রেকর্ড করে ফেলেছে। হ্যাপী বলল, “ভাইয়া, টিভিতে নওয়াজিশ আলী খানের প্রযোজনায় ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে তিনটা গান গাইতে হবে। দুটি গান আছে (কে বাঁশি বাজায় রে, এই পৃথিবীর বুকে আসে যারা)। আরেকটা গান দরকার, তাই তোমার এই গানটাও করে ফেললাম। এরপর আমি গানটা শুনি। শুনে আমি মুগ্ধ, যদিও গানটির রিদম প্যাটার্ন (আঙ্গিক) বদলে ফেলেছিল হ্যাপী। টিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর গানটি জনপ্রিয় হয়ে যায়। পরে হ্যাপীর গাওয়া ওই গানটিই আমি সালাউদ্দিন জাকীর ঘুড্ডি ছবিতে ব্যবহার করি।’
- কবির বকুল
‘এই নীল মণিহার’ গানটির গীতিকারও প্রয়াত এস এম হেদায়েত। সুরকার ও শিল্পী লাকী আখান্দ। তিনি বলেন, ‘গানটির জন্ম ১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর আজিমপুরের ১৬ নম্বর বিল্ডিংয়ে। গীতিকার এস এম হেদায়েত (প্রয়াত), শিল্পী শেখ ইশতিয়াক (প্রয়াত) ও আমি একসঙ্গে বসে গানটি তৈরি করি। মনে আছে, ওই দিন সকালে আজিমপুরের বাসা থেকে বের হয়ে আমরা তিনজন যাচ্ছিলাম নীলক্ষেতের দিকে। যাওয়ার সময় পথে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের শব্দ কানে এল। ওই রিদমটা কানে বাজতে লাগল। কিছুক্ষণ পর বাসায় ফিরি। তারপর তিনজন বসে পড়ি একটি নতুন গান করার ইচ্ছে নিয়ে। ইশতিয়াক গিটারে বি মাইনর কর্ডটা ধরে প্ল্যাকিং করছিল। কিবোর্ডে আমার আঙুল ছুঁতে ছুঁতে একটা সুর এসে যায়। ওই সুরের ওপরই এস এম হেদায়েত লিখলেন “এই নীল মণিহার এই স্বর্ণালী দিনে,/ তোমায় দিয়ে গেলাম, শুধু মনে রেখো”।
এত দ্রুতই গানটি হলো যে আমরা একটি সুন্দর গান সৃষ্টির খুশিতে বেশ অনেকক্ষণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। যা-ই হোক, গানটি প্রথম আমি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বেতারে গাই। তারপর গানটি শোনেন বিটিভির প্রযোজক জিয়া আনসারী। তিনি এই গানটির প্রেক্ষাপট নিয়েই একটি নাটক তৈরি করেন। নাম জীবন একটি উদ্যম নদী। গানটি ওই নাটকের জন্য আবার রেকর্ড করি। নাটকে অভিনয় করেছিলেন আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, আসাদুজ্জামান নূর, রাইসুল ইসলাম আসাদ। সম্ভবত ১৯৭৮ সালে নাটকটি বিটিভিতে প্রচারিত হয়। এর পরই গানটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে যায়।
- কবির বকুল
এত দ্রুতই গানটি হলো যে আমরা একটি সুন্দর গান সৃষ্টির খুশিতে বেশ অনেকক্ষণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। যা-ই হোক, গানটি প্রথম আমি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বেতারে গাই। তারপর গানটি শোনেন বিটিভির প্রযোজক জিয়া আনসারী। তিনি এই গানটির প্রেক্ষাপট নিয়েই একটি নাটক তৈরি করেন। নাম জীবন একটি উদ্যম নদী। গানটি ওই নাটকের জন্য আবার রেকর্ড করি। নাটকে অভিনয় করেছিলেন আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, আসাদুজ্জামান নূর, রাইসুল ইসলাম আসাদ। সম্ভবত ১৯৭৮ সালে নাটকটি বিটিভিতে প্রচারিত হয়। এর পরই গানটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে যায়।
- কবির বকুল
ভালোবাসার গান বলতেই তরুণ-তরুণীদের মুখে যেটি অবলীলায় গুনগুনিয়ে ওঠে, সেটি সোলস ব্যান্ডের ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে/ও সে তো মুখ খোলেনি/সুর শুধু সুর তুলেছে/ভাষা তো দেয়নি...’। মজার ব্যাপার হলো, গানটি তপন চৌধুরীর গাওয়া—এটা সবাই জানলেও এ গানের গীতিকার যে নকীব খান, সে তথ্যটি অনেকের অজানা। আর গানটি সুর করেছেন নকীব খানের বড় ভাই ঝিলু খান।
গানটির সৃষ্টির কথা জানতে ফোন করা হয়েছিল শিল্পী তপন চৌধুরীকে (তিনি বর্তমানে কানাডাপ্রবাসী)। ফোনে তিনি বললেন, ‘এই গানের জন্ম ১৯৮০ সালে ঢাকার আরামবাগে নকীবের বড় ভাই ঝিলু খানের বাড়িতে। তিনি তখন আলহেলাল হোটেলের পেছনে একতলা একটি বাড়িতে থাকতেন। ওখানে নকীব আর ঝিলু ভাই মিলে গানটি তৈরি করেন। আমি তখন লালমাটিয়া গ্রাফিকস আর্টস কলেজে পড়ি। ঢাকায় বসেই গানটি আমি তুলে নিই। চট্টগ্রামে সৈকতচারী নামে আমাদের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল। ওই সংগঠনের অনুষ্ঠানে প্রথম আমি গানটি গাই। এরপর সোলসের জন্য গানটি আমরা অনুশীলন করি। তখন বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে (নাম মনে পড়ছে না) গান গাওয়ার জন্য সোলসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমরা গানটি রেকর্ড করতে যাই ইপসাতে। কিন্তু অর্ধেক কাজ করার পর রেকর্ডিং বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আমরা গানটি নতুন করে রেকর্ড করি ঝংকার স্টুডিওতে। এই গানে সোলসের প্রথম দিককার সব সদস্যই ছিল। কিবোর্ডে নকীব খান, লিড গিটারে আইয়ুব বাচ্চু, ড্রামসে পিলু খান, পারকিউশনে নাসিম আলী খান, রিদম গিটারে জেরার্ড ও র্যালি এবং বেজ গিটারে শাহেদ। একমাত্র নাসিম ছাড়া ওই সময়ের আর কেউ এখন সোলসে নেই। কিন্তু ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ গানটি রয়ে গেছে। সোলস এ পর্যন্ত যত কনসার্ট করেছে, সবখানেই এই গান গাইতে হয়েছে, কারণ সোলস মানেই “মন শুধু মন ছুঁয়েছে”।’
গানটির সৃষ্টির কথা জানতে ফোন করা হয়েছিল শিল্পী তপন চৌধুরীকে (তিনি বর্তমানে কানাডাপ্রবাসী)। ফোনে তিনি বললেন, ‘এই গানের জন্ম ১৯৮০ সালে ঢাকার আরামবাগে নকীবের বড় ভাই ঝিলু খানের বাড়িতে। তিনি তখন আলহেলাল হোটেলের পেছনে একতলা একটি বাড়িতে থাকতেন। ওখানে নকীব আর ঝিলু ভাই মিলে গানটি তৈরি করেন। আমি তখন লালমাটিয়া গ্রাফিকস আর্টস কলেজে পড়ি। ঢাকায় বসেই গানটি আমি তুলে নিই। চট্টগ্রামে সৈকতচারী নামে আমাদের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল। ওই সংগঠনের অনুষ্ঠানে প্রথম আমি গানটি গাই। এরপর সোলসের জন্য গানটি আমরা অনুশীলন করি। তখন বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে (নাম মনে পড়ছে না) গান গাওয়ার জন্য সোলসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমরা গানটি রেকর্ড করতে যাই ইপসাতে। কিন্তু অর্ধেক কাজ করার পর রেকর্ডিং বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আমরা গানটি নতুন করে রেকর্ড করি ঝংকার স্টুডিওতে। এই গানে সোলসের প্রথম দিককার সব সদস্যই ছিল। কিবোর্ডে নকীব খান, লিড গিটারে আইয়ুব বাচ্চু, ড্রামসে পিলু খান, পারকিউশনে নাসিম আলী খান, রিদম গিটারে জেরার্ড ও র্যালি এবং বেজ গিটারে শাহেদ। একমাত্র নাসিম ছাড়া ওই সময়ের আর কেউ এখন সোলসে নেই। কিন্তু ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ গানটি রয়ে গেছে। সোলস এ পর্যন্ত যত কনসার্ট করেছে, সবখানেই এই গান গাইতে হয়েছে, কারণ সোলস মানেই “মন শুধু মন ছুঁয়েছে”।’
গানটি ঠিক কবে লেখা হয়েছিল সেটা এই মুহূর্তে পুরোপুরি মনে করতে পারছি না। তবে যতোদূর মনে পড়ে সময়টা ছিল ১৯৮৩ কিংবা '৮৪ সালের কোনো একটা দিন। আমার বাড়ি যেহেতু চট্টগ্রাম তাই প্রায়শই ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে হতো। আর খুব বেশি ঝামেলা না হলে আমি প্রায়শই ট্রেনে যাতায়াত করতাম। মজার বিষয় হলো 'ভালোবাসি জোসনা রাতে' এই গানটিও লেখা হয়েছিল এমনই একটি ট্রেন জার্নির সময়। এমনকি গানটির প্রাথমিক সুরও আমি করেছিলাম ট্রেন ভ্রমণের সময়টাতেই। যদিও গানটা লিখেছিল আমার বন্ধু ডা: মোহাম্মদ আরিফ। আমি আর ও যখন ট্রেনে করে ঢাকা ফিরছিলাম তখন বাইরে প্রচন্ড জোসনা ছিল। জোসনার সেই আলোতে ট্রেনলাইনের আশপাশের কাশবন, গাছপালা, জোসনার আলোতে ভাসা আকাশের মেঘ সবকিছুই আমাদের অসম্ভব মুগ্ধ করেছিল। আর সেই মুগ্ধতা বোধ থেকেই আরিফ গানটি লিখেছিল। মূলত এটা ছিল প্রকৃতির প্রতি মানুষের প্রেমের একটি ছন্দবদ্ধ প্রকাশ। ট্রেনে থাকাকালীন সময়ে আরিফ একটার পর একটা লাইনের কথা বলছিল, আর আমি প্রায় সাথে সাথেই গুনগুন করে তাতে সুর দেবার চেষ্টা করছিলাম। এভাবে ট্রেনে বসেই পুরো গানটি লেখা এবং সুর করা শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে ঢাকায় ফিরে আমি গানটির কম্পোজিশন ফাইনাল করি। আর '৮৫ তে রেনেসাঁ ব্যান্ডটি গঠনের পর ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবামেই আমরা এই গানটি রাখার সিদ্ধান্ত নেই। যদিও গানটির চূড়ান্ত কম্পোজিশন খুব সম্ভবত '৮৪ তেই হয়ে গিয়েছিল। 'ভালোবাসি জোসনা রাতে' শিরোনামের গানটি সর্বপ্রথম শ্রোতাদের সামনে আসে '৮৮ তে রেনেসাঁর প্রথম সেল্ফ টাইটেলড ডেবু্য অ্যালবামের মধ্য দিয়ে। গানটিতে আমি নিজেই কণ্ঠ দেই। আর আমাকে গানটি করতে সহায়তা করে রেনেসাঁ ব্যান্ডটির সকল সদস্য।
মন কি যে চাই বলো, যারে দেখি লাগে ভাল......এই গানটি ৯০ দশকের একটি বেশ জনপ্রিয় গান। কিন্তু এই গানটি প্রকাশ নিয়ে ৩টি ব্যান্ডের মধ্যে দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়েছিল। এমন কি মারামারি-ধরাধরি হওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সেই তিনটি ব্যান্ড ডিফরেন্ট টাচ, উইনিং এবং চাইম। এই তিন ব্যান্ডের সদস্যদের একে অপরের সাথে একটা ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল। অনেক সময় কেউ কেউ একসাথে প্র্যাকটিসও করতেন। গানটি মূলত ছিল উইনিং ব্যান্ডের। উইনিং এর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে তারা এ্যালবাম প্রকাশ করতে পারছিলেন না। এবং এর মাঝে তারা শুনলেন তাদের "মন কি যে চাই" গানটি চাইম বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাওয়া শুরু করেছে। এবং গানটি চাইম তাদের নিজেদের বলে দাবী শুরু করেছেন। উইনিং এমন পরিস্থিতিতে কি করবে ভেবে পাচ্ছিলেন না। ঠিক এই সময়ে ডিফরেন্ট টাচ তাদের প্রথম এ্যালবামের কাজ শুরু করেছেন। এবং তাদের প্রায় গানগুলো সম্পন্ন হয়েছে। উইনিং তাদের " মন কি যে চাই" গানটি ঐ এ্যালবামে করার জন্য ডিফরেন্ট টাচকে অনুরোধ করে। ডিফরেন্ট টাচতো উইনিং এর গান পেয়ে মহাখুশী এবং গানটি করেও ফেলে। কিন্তু উইনিং এর এই গান ডিফরেন্ট টাচ তাদের এ্যালবামে করছে এ খবর জেনে চাইমতো মহা ক্ষ্যাপা। ডিফরেন্ট টাচের এই এ্যালবাম প্রকাশে বাধা দিল চাইম। চাইম বলল এই গান তাদের উইনিং এর নয়। এই নিয়ে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক, বিচার শালিশ। অবশেষে এক বেঠকের মাধ্যমে এই গানের মালিকানা নিয়ে ফয়সালা হয়েছিল। ডিফরেন্ট টাচ তাদের এ্যালবামে গানটি করেছিল। উইনিংও তাদের পববর্তী এ্যালবামে গানটি করে।
কোনো কিছুই জীবন-বিচ্ছিন্ন নয়। প্রতিটি জীবনই ছোট ছোট গল্পের সমাহারে ঋদ্ধ। আর গান সেতো জীবনের গল্পেরই একটি অংশ। একটা গান কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি হয় না। জীবনের পথচলায় অর্জিত অভিজ্ঞতা, দুঃখবোধ, সুখানুভূতি, রোমান্স এসব প্রেরণা থেকেই সৃষ্টি হয় একটি গানের ভ্রূণ। আর তা একটু একটু করে বড় হতে থাকে গীতিকবি ও সুর স্রষ্টার ভেতরে। এভাবেই কোনো এক পরম ক্ষণে জন্মলাভ করে একটি গান। আর তা যত্ন ও ভালোবাসায় রূপ নেয় পরিপূর্ণ একটি সংগীতে। আমার এই গানটি কোনো রকম প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি নয়; হুট করেই চলে এসেছিল। আমি সঞ্জীব দা'র খুবই প্রিয়ভাজন একজন ছিলাম। আমার কবিতা ও গানের কথার প্রতি তার ছিল বিশেষ আগ্রহ। একদিন সঞ্জীব দা আমাকে কয়েকটা গান বেঁধে দিতে বললেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই এ গানটি তৈরি হয়ে যায়। যেহেতু আমি গ্রামের ছেলে, মাটির সোঁদা গন্ধ আমার সর্বাঙ্গে, রক্তে শেকড়ের টান, হয়তো তাই লোকজ ধারার এ গানের কথাগুলো সহজাতভাবেই আমার ভেতরে তৈরি হয়। মূলত গুনগুন করতে করতেই এ গানটি একই সাথে কথা ও সুরে প্রাণ লাভ করে। এরপর গানটি সঞ্জীব দা'কে দিই। বাপ্পা মজুমদার এর সংগীত করেন। তারপর সঞ্জীব দা' ও বাপ্পা দা'র যৌথ কণ্ঠে গানটি হানিফ সংকেতের ইত্যাদি অনুষ্ঠানে গাওয়া হয়। এর পরের গল্প তো আপনাদের সবারই জানা।
- কামরুজ্জামান কামু
- কামরুজ্জামান কামু
এই গানটি আমি লিখেছিলাম ২০০৭ সালের মাঝামাঝি একটা সময়ে। তখন আমি ব্যান্ডদল ‘দলছুট’ এর জন্য বেশ কিছু গান লিখছিলাম। সেই সাথে লেখা হচ্ছিল বাপ্পা মজুমদারের জন্যও। বিষয়টি এমন ছিল যে, বেশ অনেকগুলো গান লেখার পর ব্যান্ড কিংবা বাপ্পা দা যার যেটা পছন্দ হয় সেটা সে করবে। ‘সূর্যস্নানে চল’ গানটির মাধ্যমে আমি যে ভাবনাটিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলাম সেটা হলো সহজ করে বাঁচতে শেখা। আমরা সবাই আসলে জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে একটা বাজে সময়, একটা অস্থির সময় কিংবা খানিকটা হতাশার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করি। তাছাড়া আমাদের চারপাশে এত বেশি টেনশন আর বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা ঘটে যে অনেকেই হাঁপিয়ে ওঠেন। তবে আমার মনে হয়েছে যে, আমাদের জীবনটা এমনিতেই এতটা জটিল যে এটি নিয়ে আর জটিল কোনো ভাবনা না করাটাই ভাল। আমরা নিজেরা যত সহজ থাকবো মানুষের সাথে আমাদের ‘ইন্টার্যাকশন’টাও কিন্তু ততটাই সহজ হবে। কাজেই ‘সূর্যস্নানে চল’ গানটির মাধ্যমে আমি বলতে চেয়েছি যে, সবাই যদি তার নিজস্ব গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে একই সূর্যের নিচে দাঁড়াতে পারে তাহলে জীবনকেও অনেক সহজ ও সরলভাবে যাপন করা যায়। গানটির প্রথম চার লাইন আমি লিখেছিলাম নিতু নামের এক বন্ধুর সাথে আড্ডা দিতে দিতে। নিতু’র জীবনের বেশ কিছু সমস্যার কথা গল্পচ্ছলে শুনতে শুনতে আমার মনে হয়েছিল যে আমাদের সমাজে প্রতিটি মেয়েকেই কোনো না কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। তারা মন খুলে অনেক কিছুই বলতে পারে না। নানারকম দ্বিধার মুখোমুখিও তাদের হতে হয়। তো এই ভাবনার প্রেক্ষাপট থেকেই ‘সূর্যস্নানে চল’ গানটির প্রথম চার লাইন লেখা। এরপর গানের এই চিন্তাটা হয়তো নানা সময়ে আমার মাথায় এসেছে। তবে আমি যেহেতু জোর করে অন্ত:মিল দিয়ে গান শেষ করার চাইতে স্বতস্ফুর্তভাবেই লিখতে পছন্দ করি তাই পুরো গানটা শেষ করতে আমার দেড়-দু’মাস সময় লেগে গিয়েছিল। কাজেই গানটা দু’তিন দিনে পুরোটা লেখা হলেও এর নেপথ্য চিন্তার বয়স প্রায় দু’মাস বলা যেতে পারে।
'ট্র্যাপ' ব্যান্ডের জনপ্রিয় গান 'স্বার্থপর' নিয়ে বলেছেন এই গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী তরুণ।
গানটি সৃষ্টি হওয়ার গল্প নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। কারণ, ওই সময় জীবন কোনো নির্দিষ্টতার মধ্যে ছিল না। ছেলে মানুষ ছিলাম, যখন যা মনে এসেছে তা-ই লিখেছি। এর নির্দিষ্ট কোনো সময়ের কথা আমার মনে নেই, হঁ্যা, এতটুকু বলা যায়, ১৯৯৪-এ গানটি লেখা, ওই সময় আমরা স্কুল ফ্রেন্ডরা মিলে 'রাইডার্স' নামে একটি ব্যান্ড লাইনআপ করি। বন্ধুরা সবাই মিলে গান করি, মজা করি, সব মিলিয়ে দুর্দান্ত সময় ছিলো তখন। কোনো কিছুরই নির্দিষ্টতা ছিলো না। তাই এই গানটির ক্ষেত্রেও কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা উপলক্ষ কিছুই ছিল না। তবে, এটা ঠিক যে, গানটি গড়ে উঠেছিল একটি নেগেটিভ সেন্স থেকে। গানের কথাগুলোও কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দেয়। হয়তো ওই সময় কোনো ব্যাপারে আপসেট ছিলাম, তারই সূত্র ধরে গানটির সৃষ্টি। আর তখন তো শুধুমাত্র নিজের জন্যই লিখি, নিজের তৃপ্তির জন্য লিখি, পরে গানটি মানুষের ভালোলাগে বলেই না এত কিছু। আর একই সময় আমি 'সরলতার প্রতিমা' গানটি লিখেছি, যা চলে গেছে খালিদের কণ্ঠে আর 'স্বার্থপর' গানটি আমার কণ্ঠে_দুটো গানই তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তখন সবকিছুই ছিলো তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরা। কোনো কিছুতেই কোনো বাধা-ধরা নিয়ম ছিলো না। আর তখন 'তুই তুকারি' করে গান লিখতাম, আমার প্রায় গানই 'তুই' সম্বোধনে। তখন যেভাবে ভালো লাগতো সেভাবেই গানের কথা সাজাতাম। আর এই গানটিও একইভাবে করা। এক বসাতেই লেখা। একই অনুভূতি যে সবসময়ে আসবে, তারতো কোনো কথা নেই। যখন যা লেখার মতো তাই কাগজবন্দি করেছি। এই গানের আগেও আমি বহু গান লিখেছি, কিন্তু প্রায় গানের হদিস আমার জানা নেই। হয়তো অনেকগুলো আড়ালেই থেকে গেছে, এই গানটি সবার সামনে এসেছে বলেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গানটির কথা ও সুর আমিই করেছি। আর এই গানটি আমাদের বনু্লমহলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। সবাই অনুরোধ করে, গান বিক্রি করিস না, তাই সবার অনুরোধেই গানটি আমি নিজেই গাই। তা ছাড়া ওই সময় অনেক গানই অনেককে দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে এই গানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
গানটি সৃষ্টি হওয়ার গল্প নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। কারণ, ওই সময় জীবন কোনো নির্দিষ্টতার মধ্যে ছিল না। ছেলে মানুষ ছিলাম, যখন যা মনে এসেছে তা-ই লিখেছি। এর নির্দিষ্ট কোনো সময়ের কথা আমার মনে নেই, হঁ্যা, এতটুকু বলা যায়, ১৯৯৪-এ গানটি লেখা, ওই সময় আমরা স্কুল ফ্রেন্ডরা মিলে 'রাইডার্স' নামে একটি ব্যান্ড লাইনআপ করি। বন্ধুরা সবাই মিলে গান করি, মজা করি, সব মিলিয়ে দুর্দান্ত সময় ছিলো তখন। কোনো কিছুরই নির্দিষ্টতা ছিলো না। তাই এই গানটির ক্ষেত্রেও কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা উপলক্ষ কিছুই ছিল না। তবে, এটা ঠিক যে, গানটি গড়ে উঠেছিল একটি নেগেটিভ সেন্স থেকে। গানের কথাগুলোও কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দেয়। হয়তো ওই সময় কোনো ব্যাপারে আপসেট ছিলাম, তারই সূত্র ধরে গানটির সৃষ্টি। আর তখন তো শুধুমাত্র নিজের জন্যই লিখি, নিজের তৃপ্তির জন্য লিখি, পরে গানটি মানুষের ভালোলাগে বলেই না এত কিছু। আর একই সময় আমি 'সরলতার প্রতিমা' গানটি লিখেছি, যা চলে গেছে খালিদের কণ্ঠে আর 'স্বার্থপর' গানটি আমার কণ্ঠে_দুটো গানই তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তখন সবকিছুই ছিলো তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরা। কোনো কিছুতেই কোনো বাধা-ধরা নিয়ম ছিলো না। আর তখন 'তুই তুকারি' করে গান লিখতাম, আমার প্রায় গানই 'তুই' সম্বোধনে। তখন যেভাবে ভালো লাগতো সেভাবেই গানের কথা সাজাতাম। আর এই গানটিও একইভাবে করা। এক বসাতেই লেখা। একই অনুভূতি যে সবসময়ে আসবে, তারতো কোনো কথা নেই। যখন যা লেখার মতো তাই কাগজবন্দি করেছি। এই গানের আগেও আমি বহু গান লিখেছি, কিন্তু প্রায় গানের হদিস আমার জানা নেই। হয়তো অনেকগুলো আড়ালেই থেকে গেছে, এই গানটি সবার সামনে এসেছে বলেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গানটির কথা ও সুর আমিই করেছি। আর এই গানটি আমাদের বনু্লমহলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। সবাই অনুরোধ করে, গান বিক্রি করিস না, তাই সবার অনুরোধেই গানটি আমি নিজেই গাই। তা ছাড়া ওই সময় অনেক গানই অনেককে দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে এই গানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।