• আমার গান
    • নতুন সংযোজন
    • হুমকির মুখে অডিও শিল্প
  • শিকড়ের গান
  • গানের গুনীজন
    • জন্ম ও মৃত্যু
    • জানেন কি?
  • গীতিকার সুরকার
  • সোনালী সময়ের গান
  • ..............
  • গানের গল্প
    • মা
    • দেশের গান
    • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি
    • সাবিনা ইয়াসমিনের দেশের গান
    • আজম খানের গানের গল্প
    • ভালোবাসার ১০টি চলচ্চিত্রের গান
    • বৃষ্টি নিয়ে গানের গল্প
    • আধুনিক
    • চলচ্চিত্র
    • ব্যান্ড >
      • মেলায় যাই রে
    • সমকালীন
  • গান কোষ
    • সঙ্গীত ম্যাগাজিন
    • সঙ্গীত স্মারক
    • ব্যান্ডের টি শার্ট
    • মিউজিক ক্যাফে
  • গান আর গান
    • উৎসবের গান
    • দিবসের গান
    • ঘটনার গান >
      • কবির সুমন
      • বিপ্লবের গানে আজম খান
      • ইমা খানের গান
    • নাটকের গান ও সূচনা সঙ্গীত >
      • নাটকের গানের এ্যালবাম
  • গানের খবর
    • জানুয়ারী ২০১৩
    • ডিসেম্বর ২০১২
    • নভেম্বর ২০১২
    • অক্টোবর ২০১২
    • সাক্ষাতকার
  • গানের আসর
    • প্রকাশনা উৎসব জানুয়ারী ২০১৩
    • প্রকাশনা উৎসব ডিসেম্বর ২০১২
    • জানুয়ারী ২০১৩
    • ডিসেম্বর ২০১২
    • নভেম্বর ২০১২
    • অক্টোবর ২০১২
    • টিভিতে গানের অনুষ্ঠান
  • গান কিনুন
  • ..............
  • শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
  • পপ ও ব্যান্ড সঙ্গীত
  • ..............
  • এ্যালবাম প্রকাশনা ২০১২
    • জুলাই ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম জুলাই >
        • অজিত রায়
        • সুজিত মোস্তফা - অনেক বৃষ্টি ঝরে
        • সঞ্চিতা দত্ত - হৃদয়ের পটে
        • তারিন - আকাশ দেব কাকে
        • সানী জুবায়ের - কেন মেঘের ছায়া
      • দেশাত্মবোধক
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • লোকগীতি
      • চলচ্চিত্রের গান
      • শ্রুতিনাটক
      • আধুনিক
      • ব্যান্ড
      • একক ও মিশ্র
      • ধর্মীয়
      • মিউজিক ভিডিও
    • আগষ্ট ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম আগষ্ট >
        • বাপ্পা - বেঁচে থাক সবুজ
        • পোশাক শিল্পীদের আমাদের গান
        • ভালোবাসি তোমাকে ২
        • পরস্পর ২
        • অপরাজিতা
        • এল.আর.বি - যুদ্ধ
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • আধুনিক >
        • দিলরুবা খান
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও >
        • দূরবীন
      • প্রামান্যচিত্র
      • ছোটদের গান
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
      • যুগল
      • মিশ্র
      • ধর্মীয়
      • মিউজিক ভিডিও
    • সেপ্টেম্বর ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম সেপ্টেম্বর >
        • বাদল দিনের পাখি - মিশ্র
        • জাগো বাংলাদেশ - পলিন
        • আবিদ শাহরিয়ার - হে বন্ধু হে প্রিয়
        • স্বপ্নের সীমানা
        • রানওয়ে
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • আধুনিক
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
    • অক্টোবর ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম অক্টোবর >
        • রাজীব খান - এক আলোতে
        • এল আর বি - যুদ্ধ
        • ওয়ারফেজ - সত্য
        • নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান
        • ব্যান্ড মিক্সড হাতিয়ার
        • তুমি সন্ধ্যাদীপের শিখা
        • Exploring Tagore with Piano
        • ভোরের শুকতারা
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • লোক সঙ্গীত
      • যন্ত্র সঙ্গীত ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
      • আবৃত্তি
      • আধুনিক
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
      • মিশ্র
      • আন্তর্জাতিক প্রকাশনা
      • ধর্মীয়
    • নভেম্বর ২০১২
    • ডিসেম্বর ২০১২ >
      • তারেক মাসুদের গান
      • দেশাত্মবোধক >
        • জাগরনের গান ৪
      • শাস্ত্রীয়
      • লোক সঙ্গীত
      • নজরুল ও রবীন্দ্র
      • আবৃত্তি
      • ছোটদের গান
      • ১২.১২.১২ এ্যালবাম
      • চলচ্চিত্রের গান ও ডিভিডি
      • একক নারী
      • একক পুরুষ
      • মিশ্র
      • ব্যান্ড
      • মিউজিক ভিডিও
    • সালতামামি ২০১২
    • সঙ্গীতাঙ্গনের সাত সতেরো ২০১২
  • এ্যালবাম প্রকাশনা ২০১৩
  • আঞ্চলিক প্রকাশনা
  • প্রবাসী প্রকাশনা
    • ডিস্কো রেকর্ডিং
  • আন্তর্জাতিক প্রকাশনা
  • শিক্ষামুলক প্রকাশনা
  • ..............
  • আমাদের কথা
    • আমাদের শ্লোগান
    • আমাদের প্রতীক ও ব্যানার
    • আমাদের শিরোনাম সঙ্গীত
    • আমাদের অন্যান্য সাইট
  • Untitled

দেশের গান


Picture
হিন্দুস্থান রেকর্ড

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
রচনাকালঃ ১৯৫২ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী
গীতিকারঃ আব্দুল গাফ্‌ফার চৌধুরী । 
প্রথম সুরকারঃ আব্দুল লতিফ । দ্বিতীয় সুরকারঃ আলতাফ মাহমুদ

Picture
আব্দুল গাফ্‌ফার চৌধুরী
Picture
আব্দুল লতিফ
Picture
আলতাফ মাহমুদ
ভাষা আন্দোলনে আব্দুল মতিন, মাহবুব আলম চৌধুরী, গাজীউল হকদের পাশাপাশি আলতাফ মাহমুদ, আব্দুল লতিফ, শেখ লুৎফর রহমান, নিজামুল হকদের নাম কৃতজ্ঞতার সাথেই স্মরণ করতে হয়। জনতার সংগ্রামে তিনি প্রত্যক্ষভাবেই নেমেছিলেন। এ দেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামে তিনি সঙ্গীত, নাটক, নৃত্যনাট্য দিয়ে জনগণের মন জয় করেন। এর মধ্যে যে নামটি চির উজ্জ্বল, চির অমর এবং বারবারই উচ্চারিত হয় এবং হবে, সে নাম আলতাফ মাহমুদ। ৫২’র রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে আলতাফ মাহমুদ ছিলেন একজন সক্রিয় কর্মী।

শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ‘১৯৬৭ সালের ফেব্রুয়ারীর ২১, ২২ ও ২৩ তারিখ এই তিনদিন পল্টন ময়দানে তাদের উদ্যোগে লক্ষ লক্ষ জনতার উপসি'তিতে ‘জ্বলছে আগুন ক্ষেতখামারে’ শীর্ষক যে গীতিনৃত্যনাট্য মঞ্চস' হয়, তা অসীম উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল জনমনে। এই গীতিনাট্যের সঙ্গীত পরিচালনা করেন আলতাফ মাহমুদ। অভিনয়ও করেন। আনন্দের কথা এই যে, আলতাফ মাহমুদের সহশিল্পী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, অলি আহমদ অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে আলতাফ মাহমুদ তার দরদী গলায় উদাত্ত কন্ঠে গেয়েছিলেন, ‘ ও বাঙালী, তোরা ঢাকার শহর রক্তে ভাসাইলি’। আজও এই গান গাওয়া হয়, কিন' আলতাফের মতো করে কেউ আর কোনদিনও গাইতে পারবে বলে মনে হয় না।’

ভাষা আন্দোলনের অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গানটির রচয়িতা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আব্দুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। এ গানটিতে প্রথম সুর করেন প্রখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী আব্দুল লতিফ। পরে আলতাফ মাহমুদ যে সুরটি দিয়েছেন সেটাই বর্তমানে জনপ্রিয় এবং অমর সুর হয়ে আছে।

আব্দুল গাফ্‌ফার চৌধুরী কবিতাটি রচনা করেন ১৯৫২ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী। রচয়িতার নিজের ভাষ্য, ‘শহীদ রফিকের লাশ দেখেই কবিতাটি লিখে ফেলি।’ এ প্রসঙ্গে আব্দুল লতিফ বলেন যে, এ গানটি ১৯৫৩ সালে তাঁকে দিয়েছিল ড. রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই মরহুম আতিকুল ইসলাম। এটি প্রথমে ছাপা হয় প্যামপ্লেট হিসিবে। তিনি আরো বলেন, তিনি কবিতাটিতে সুরারোপ করে গানে রূপদান করেন এবং ঢাকা কলেজে ছাত্রদের এক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করেন।

আলতাফ মাহমুদের দেয়া সুরটি আজ এক ইতিহাস। এই সুর পর্যালোচনা করলে পাওয়া যায় আমেরিকান শিল্পী ন্যাট কিং কোলের গীত ‘আইরিন গুড নাইট আইরিন/ আই উইল সি ইউ ইন মাই ড্রিম’ গানের প্রথম পঙক্তির সুর। ন্যাট কিং কোলের এ গানটি আজো বিশ্বসঙ্গীত আসরে খুবই জনপ্রিয়। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার প্রখ্যাত গায়ক পল রবসনের (১৯৯৮-১৯৭৬) গানের কথা মনে পড়ে-উই আর অন দি সেম বোট ব্রাদার,উই আর অন দি সেম বোট টুগেদার। বিশ্বে যখনই কোন নতুন সৃষ্টি হয় তার সাথে থাকে মাটি ও রক্তের সম্পর্ক, তা পৃথিবীর যে কোণেই সৃজিত হোক না কেন, খুঁজলে এমন যোগসূত্র সম্পর্ক পাওয়া যাবেই। বলতে বাধা নেই পল রবসনকে শুধু কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পী হওয়ার কারণে পৃথিবীর অন্য কোন দেশে যাওয়ার পাসপোর্ট দেয়নি তৎকালীন আমেরকিান শাসকরা। এখানে উল্লেখ্য, আলতাফ মাহমুদ ঢাকা থেকে করাচি যাওয়ার পরও পাকিস্থানী শাসকরা তাঁকে ভিয়েনা যাওয়ার পাসপোর্ট দেয়নি।

শিল্পীর সুরে গানটির দিন-তারিখ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ বিতর্কের সমাধান গীতিকার আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী নিজেই দিয়েছেন, ‘আমার গানটি যদিও ১৯৫২ সালে লেখা শহীদ রফিকের লাশ দেখে। আকস্মিকভাবে করাচি থেকে আলতাফ মাহমুদ এসে আমাকে বললেন, আমি গানটাতে সুর দিতে চাই। আমি বললাম, লতিফ ভাই আপত্তি না করলে তো কোনও প্রশ্ন ওঠে না। লতিফ ভাই বললেন, না আমার কোন আপত্তি নেই। উনি গানটির সুর দিলেন।

১৯৫৪ সাল থেকে এই যে শুরু হলো এই গানটি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি’ গাওয়া, তারপর আর বন্ধ হয়নি। সুরের প্রয়োজনে আলতাফ মাহমুদ কবিতাটির শেষ ছয়টি চরণ বাদ দেন। অবশ্য এ ব্যাপারে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর অনুমতি নিয়েছিলেন।


Picture

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি 
গীতিকার: গোবিন্দ হালদার
সুরকার: আপেল মাহমুদ

মুক্তির সেই গানের গাথামোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি (গীতিকার: গোবিন্দ হালদার, সুরকার: আপেল মাহমুদ) স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শিল্পী ছিলেন আপেল মাহমুদ। তার লেখা ও সুর করা অন্যতম গানগুলোর মধ্যে অন্যতম এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর, মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি। আপেল মাহমুদ কেবল শব্দসৈনিকই ছিলেন না, তিনি আরিক অর্থেই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। ২৫ মার্চ কাল রাতেই তিনি চলে গিয়েছিলেন রণাঙ্গনে। যুদ্ধ করেছিলেন ৩ নং সেক্টরে। ৩ জুন পর্যন্ত। এরপর তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর পান। শোনেন বেতার কেন্দ্রের জন্য শিল্পী খোঁজা হচ্ছে। তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। এর আগেই তার জীবনে ঘটে গিয়েছিলো নিদারুণ দুঃসহ এক ঘটনা। রাজাকাররা তার ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিলো। আশ্রয় হারিয়ে তার মা তার ছোট ভাইকে নিয়ে পালিয়ে বেড়ান এখান থেকে ওখানে। এইসব দুঃসহ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তাকে অনুপ্রাণিত করেছিলো গানগুলো রচনা ও সুর করতে।

একাত্তরে তার গানগুলো ছিলো তার ভাষায়, প্রতিশোধ আর প্রতিবিধানের সঙ্গীত। তার মায়ের কষ্টের প্রতিশোধের সঙ্গীত। তার দেশের দুঃসময়ের প্রতিবিধানের সঙ্গীত। বিজয়ের প্রতি প্রচন্ড আকাঙ্খার সঙ্গীত।

‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’ ও ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গান দু’টি একাত্তরে মানুষকে প্রচন্ডভাবে উৎসাহ জুগিয়েছে। এ গান শুনে মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। যুদ্ধ জয়ের জন্য তাদের তৃষ্ণা বেড়েছে। মানুষ যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মনোবল শক্ত করেছে। তার ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গানটি শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি গান। যারা আমাদের বিজয়ের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার গান, আমরা তোমাদের ভুলবো না। তোমাদের মৃত্যু বৃথা যাবে না। এ দেশ স্বাধীন হবেই।

একাত্তরে এরকম অসংখ্য গান প্রচারিত হয়েছিলো স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে।  যে গানের পিছনে ছিলো এমনি অজস্র ছোট ছোট অসাধারণ কাহিনী। আর সেগুলো রক্তাক্ত যুদ্ধের মাঝেও মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলো। তার প্রমাণ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে পাঠানো জনতা আর মুক্তিযোদ্ধাদের অজস্র চিঠি। স্বাধীনতার পটভূমিতে এই গানগুলো যে মনোবল আর সাহস আপামর জনতা আর মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিলো তা অতুলনীয়। বিজয় দিবসে সেইসব গানের গীতিকার, সুরকার, শিল্পীসহ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্লিটজের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। 


মাঝি নাও ছাইড়া দে
গীতিকার ও সুরকার : আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল 
কণ্ঠশিল্পী : সাবিনা ইয়াসমিন 

আমার জনপ্রিয় দেশের গানগুলোর একটি এটি। আমার নিজেরও খুব প্রিয় গান। গানটি অনেক বছর ধরেই বিভিন্ন নাচের সঙ্গে গাইতে দেখি। আমার দেশের গানগুলোর প্রচার আমাকে খুবই আপস্নুত করে। দেশের মানুষ কিন্তু দেশের গান ভালোবাসে। দেশের গান শুনতে চায়। যাই-ই হোক, 'ও মাঝি নাও ছাইড়া দে' গানটি কী ভাবে তৈরি হলো, সেই গল্পটা বলি। প্রায় তিন দশক আগের কথা। বিকেলের দিকে অনেক সময়ই সাভারের দিকটায় ঘুরতে যেতাম। ওখানকার সবুজ মুখ টানতো। এমনই একদিন ওদিকে গিয়েছি। দেখলাম নদীতে ইঞ্জিন নৌকা এসেছে। প্রচণ্ড শব্দে নৌকা গ্রামের নিস্তব্ধতা খান খান করে দিচ্ছে। আমার হঠাৎ মনে হলো, এক সময় এই ইঞ্জিন নৌকাই হয়তো বৈঠা নৌকার জায়গা নিয়ে নেবে। এখন যে মাঝি কণ্ঠে সুর তোলে নৌকা চালায়, তার তখন করার কিছু থাকবে না। ভাবলাম, এ নিয়ে একটা গান লিখলে কেমন হয়। যাতে উঠে আসবে ইঞ্জিন নৌকা আসায় মাঝির মনের অবস্থা। পরবর্তীতে ইঞ্জিন নৌকায় এভাবে ছেয়ে গেছে বলেই আমার গানটি শ্রোতাদের স্পর্শ করেছে। সাবিনা ইয়াসমিন তখন আমার বেশিরভাগ গান করতেন। তিনি এ গানটিও গেয়েছিলেন।

Picture

সব কটা জানালা খুলে দাও না
গীতিকার : প্রয়াত নজরুল ইসলাম বাবু 
সুরকার : আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল 
কণ্ঠশিল্পী : সাবিনা ইয়াসমিন

স্বাধীনতা উত্তর কালে সৃষ্ট কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অন্যতম 'সব কটা জানালা খুলে দাও না'। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এই গানের সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল জানাচ্ছেন গানটির নেপথ্যের গল্প। 

আমি মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছি। তখন আমার বয়স ১৪ বছর। আমরা কমবয়সী কয়েকজনের কাজ ছিল, কুমিলস্না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত হানাদাররা কোথায় ঘাঁটি গেড়েছে, তা দেখে আসবো। একবার ধরাও পড়েছিলাম। আমার সঙ্গীরা শহীদ হলেও আমি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম। স্বাধীনতার পর সহযোদ্ধা বন্ধুদের হারিয়ে উদভ্রান্তের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই গানকে আকড়ে ধরি আমি। একটানা আট বছর শুধু দেশের গান করেছি। একদিন মনে হলো, যারা মুক্তিযুদ্ধে মারা গেছেন, তাদের তো আসলে মৃত্যু নেই। তারা আমাদের আশপাশেই কোথাও আছেন। প্রয়াত গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু তখন আমার সাথেই থাকেন। আমার গানগুলো তিনিই লিখতেন। বাবুকে ডেকে বললাম, এই থিমের উপরে একটি গান লিখতে। বাবু লিখলেন, 'সব কটা জানালা খুলে দাওনা'। জানালা শব্দটা শুরুতে ছিল না। সেখানে ছিল 'দরজা'। 'দরজা' শব্দটা আমার কাছে মনে হলো কর্কশ। সেই তুলনায় জানালায় নরম একটা ব্যাপার আছে। অনেকক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর 'জানালা' শব্দটি রাখার ব্যাপারেই দুজনে একমত হলাম। গানটি গেয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। আমরা দুজন তখন বিটিভিতে একসঙ্গে পঁচিশটি দেশের গান করি। বিটিভি তখন যে পারিশ্রমিক দিতো, তাতে যাতায়াতের ভাড়াও উঠতো না। কিন্তু দেশপ্রেমের টানে গান করে গেছি। 'সব কটা জানালা খুলে দাও না' অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি গান। এই গান প্রমাণ করে, মানুষ দেশের গান শুনতে চায়। তা না হলে এতো বছর ধরে এই গান টিকে থাকতো না।
Powered by Create your own unique website with customizable templates.