জাগরনের গান ৪
|
কথাঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান । সুরঃ আব্দুল আহাদ
|
বাংলাদেশের ঋদ্ধ অতীতের বিপ্লবী ও সংগ্রামী চেতনা জাগানিয়া গান নিয়ে বিগত বছরগুলোতে বিজয়ের মাসে বাংলালিংকের সহায়তায় জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও ও গবেষণা কেন্দ্র গণসংগীতের সংকলন অ্যালবাম প্রকাশ করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল বিজয়ের আবহে রমনা বটমূলের মঞ্চে প্রকাশিত হলো ‘জাগরণের গান-৪’। মোট ৭১টি গান স্থান পেয়েছে এবারের এই অ্যালবামে। এদিকে এই অ্যালবাম প্রকাশনা উপলক্ষে গতকাল বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যমণ্ডিত রমনা বটমূলে আলোচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্য ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুরো অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল স্টেপ মিডিয়া। সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান। সকাল ৯টায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। চিত্রাঙ্কনের বিষয়বস্তু ছিল - ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ : আমাদের বাংলাদেশ’। এরপর ৯টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক কামাল লোহানী। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও আইটিআই’র সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও বাংলালিংকের সিনিয়র মার্কেটিং ডিরেক্টর শিহাব আহমেদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা আহমেদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, বাংলালিংকের হেড অব পি আর এন্ড কমিউনিকেশন মার্কেটিং শরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক মোস্তফা তৌহিদ খান।
বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন, অন্যায়ের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, মুক্তির সংগ্রামে গানও ছিল উদ্দীপনা জাগাতে। ছিল প্রেরণার উৎস হিসেবে। কখনো কখনো দৃপ্ত কণ্ঠের গান হয়ে উঠেছে হাতের হাতিয়ারের মতোই। সেই গানগুলোর নতুন আরও একটি সংকলন হাতে পাবেন শ্রোতারা এই বিজয়ের মাসে। জাগরণের গান নামের গণসংগীতের অ্যালবামের চতুর্থ সংকলনটি প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র।
এবার চার বছরে পড়ল জাগরণের গান অ্যালবাম প্রকাশনার। গণজাগরণমূলক গানগুলোকে বাণীবদ্ধ করে মূল সুরে নতুনভাবে রেকর্ড করে প্রকাশনার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র সেবার ৭১টি গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেছিল। দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল সেই গানগুলো। কেন্দ্র তাতে উৎসাহিত হয়েছে। অব্যাহত রেখেছে তাদের উদ্যোগ। এর ধারাবাহিকতায় গত তিন বছরে প্রকাশিত হয়েছে তিনটি অ্যালবাম। চতুর্থ অ্যালবামটি প্রকাশিত হচ্ছে এ বছর। এই চার বছরে ৩০০ গান তার মূল সুর ও বাণীতে ধারণ করার কাজ সম্পন্ন হলো।
জাগরণের গান-৪-এর প্রকাশনা উপলক্ষে গণসংগীত উৎসবেরও আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান হবে রমনার বটমূলে, ১৫ ডিসেম্বর সকাল নয়টায়। জাগরণের গান অ্যালবাম প্রকাশের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে স্টেপমিডিয়া। সহযোগী হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো, এবিসি রেডিও এবং চ্যানেল আই। সহযোগিতায় মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক।
জাগরণের গান-৪-এর প্রকাশনা উপলক্ষে গতকাল শনিবার শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনের। গতানুগতিক সংবাদ সম্মেলনের মতো ছিল না আয়োজনটি। শুরু হয়েছিল জাগরণের শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা দিয়ে। পরে গণসংগীত নিয়ে আলোচনায় উঠে এল বাঙালির অতীতের গৌরবময় আন্দোলন-সংগ্রামের নানা দিক। অবধারিতভাবেই উঠল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন আঙ্গিকে গণসংগীত রচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও এল। আর গত চার বছরের জাগরণের গান-এর কার্যক্রমের প্রসঙ্গ তো ছিলই।
শুরুতেই জাগরণের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে শোনালেন ‘দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য’, ‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে জাগছে বাঙালিরা...।’ শেষে গাইলেন তাঁরা ‘লাখো লাখো হাত ভেঙেছে আজিকে ভীরুতা খিল/ রাজপথে পথে উত্তাল তাই জন-মিছিল/ হাজার কণ্ঠ দাবি করে আজ বিচার চাই/ লক্ষ কণ্ঠে উঠেছে আওয়াজ বিচার চাই/ শাস্তি চাই, বিচার চাই, হত্যাকারীর বিচার চাই...।’ পরের আলোচনায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গটি এল ঘুরেফিরে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিল্পী জান্নাত-এ-ফেরদৌসি।
জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের সম্পাদক মোস্তফা জাহিদ খান সূচনা ভাষ্যে জানালেন, চতুর্থ অ্যালবামে গান রয়েছে ৭১টি। পাঁচটি সিডিতে ধারণ করে একটি সুদৃশ্য বাক্সে অ্যালবামটি বাজারে ছাড়া হবে ১৭ ডিসেম্বর। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সময়ের বিভিন্ন গান এতে সংকলিত হয়েছে। এমন আরও অনেক গান রয়েছে। গীতিকার ও সুরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় সেসব গান তাঁরা রেকর্ড করতে পারেননি। বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সম্পাদক শিল্পী বিশ্বজিৎ রায় ভবিষ্যতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, আইপিটিএর গান এভাবে আলাদা করে বিষয় ও সময়ভিত্তিক গণসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশের পরামর্শ দেন।
জাগরণের কার্যনির্বাহী সদস্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক গুরুত্ব দিলেন সরকারের দিকে না তাকিয়ে সামাজিক শক্তিগুলোকে এগিয়ে আসার প্রতি। এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কাজ রয়েছে। ঐতিহ্যের অনুগামী হয়ে সাংস্কৃতিক চেতনার মূলধারায় সেই কাজগুলো করতে হবে নিজেদের প্রয়োজনেই। জাগরণের গান-এর অ্যালবামের ধারাবাহিক প্রকাশনা তেমনই একটি কাজ।
জাগরণের গান-এর এই উদ্যোগে পাশে থাকার কথা বললেন এবিসি রেডিওর প্রধান নির্বাহী সানাউল্লাহ।
বাংলালিংকের জ্যেষ্ঠ বিপণন পরিচালক শিহাব আহমেদ জানান, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই গণসংগীতগুলোকে সাধারণ মানুষের আরও কাছে নিয়ে যেতে তাঁরা সহায়তা দেবেন। জাগরণের গান-এর চার অ্যালবামে ৩০০টি গান রেকর্ড করা হলো। আর ৬৫টি গান হলেই প্রতিদিন একটি করে নতুন গণসংগীত শুনতে পাবেন শ্রোতারা। প্রকাশনা অব্যাহত থাকবে এই আশাবাদ প্রকাশ করলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। গানের আঙ্গিক নিয়ে বললেন শিল্পী সোহরাব উদ্দীন।
গণসংগীতের দিকপাল সলিল চৌধুরী, সুখেন্দু চক্রবর্তী, শেখ লুৎফর রহমান, আবদুল লতিফ, আলতাফ মাহমুদ প্রমুখের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান তুলে ধরলেন একবিংশ শতকের বদলে যাওয়া নতুন সামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন আঙ্গিকের গণসংগীত রচনার প্রাসঙ্গিকতা। অতীতের গানগুলো সেই উত্তাল দিনের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। অনুপ্রাণিত করে, উদ্দীপনা জাগায়। তবে এখন জীবনে যে নতুন সংকট, জনমানসের যে নতুন মেধা, মনন, অভীপ্সার সৃষ্টি হয়েছে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নতুন গান করা যায় কি না, সে কথাই বলেছিলেন তিনি।
সভাপতি ছিলেন আইটিআইয়ের সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। তিনি চার বছর ধরে এই শ্রমসাধ্য কাজটি করার জন্য জাগরণের সবাইকে অভিনন্দন জানান। নতুন গান রচনা প্রসঙ্গে বললেন দুটি সমস্যার কথা। গণসংগীত রচনার জন্য গীতিকারের স্বল্পতা রয়েছে, পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরমতসহিষ্ণুতার অভাবও এ ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এর ভেতর দিয়েই মানুষের অদম্য শক্তিতে দেশ এগিয়ে চলেছে।
জাগরণের গান সেই অদম্য মানুষকে এগিয়ে যেতে শক্তি ও প্রেরণা জোগাবে—এই আশাবাদ নিয়েই শেষ হয়েছিল আয়োজন।
- প্রথম আলো, ৯ ডিসেম্বর ২০১২
এবার চার বছরে পড়ল জাগরণের গান অ্যালবাম প্রকাশনার। গণজাগরণমূলক গানগুলোকে বাণীবদ্ধ করে মূল সুরে নতুনভাবে রেকর্ড করে প্রকাশনার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র সেবার ৭১টি গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেছিল। দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল সেই গানগুলো। কেন্দ্র তাতে উৎসাহিত হয়েছে। অব্যাহত রেখেছে তাদের উদ্যোগ। এর ধারাবাহিকতায় গত তিন বছরে প্রকাশিত হয়েছে তিনটি অ্যালবাম। চতুর্থ অ্যালবামটি প্রকাশিত হচ্ছে এ বছর। এই চার বছরে ৩০০ গান তার মূল সুর ও বাণীতে ধারণ করার কাজ সম্পন্ন হলো।
জাগরণের গান-৪-এর প্রকাশনা উপলক্ষে গণসংগীত উৎসবেরও আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান হবে রমনার বটমূলে, ১৫ ডিসেম্বর সকাল নয়টায়। জাগরণের গান অ্যালবাম প্রকাশের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে স্টেপমিডিয়া। সহযোগী হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো, এবিসি রেডিও এবং চ্যানেল আই। সহযোগিতায় মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক।
জাগরণের গান-৪-এর প্রকাশনা উপলক্ষে গতকাল শনিবার শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনের। গতানুগতিক সংবাদ সম্মেলনের মতো ছিল না আয়োজনটি। শুরু হয়েছিল জাগরণের শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা দিয়ে। পরে গণসংগীত নিয়ে আলোচনায় উঠে এল বাঙালির অতীতের গৌরবময় আন্দোলন-সংগ্রামের নানা দিক। অবধারিতভাবেই উঠল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন আঙ্গিকে গণসংগীত রচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও এল। আর গত চার বছরের জাগরণের গান-এর কার্যক্রমের প্রসঙ্গ তো ছিলই।
শুরুতেই জাগরণের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে শোনালেন ‘দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য’, ‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে জাগছে বাঙালিরা...।’ শেষে গাইলেন তাঁরা ‘লাখো লাখো হাত ভেঙেছে আজিকে ভীরুতা খিল/ রাজপথে পথে উত্তাল তাই জন-মিছিল/ হাজার কণ্ঠ দাবি করে আজ বিচার চাই/ লক্ষ কণ্ঠে উঠেছে আওয়াজ বিচার চাই/ শাস্তি চাই, বিচার চাই, হত্যাকারীর বিচার চাই...।’ পরের আলোচনায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গটি এল ঘুরেফিরে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিল্পী জান্নাত-এ-ফেরদৌসি।
জাগরণ সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের সম্পাদক মোস্তফা জাহিদ খান সূচনা ভাষ্যে জানালেন, চতুর্থ অ্যালবামে গান রয়েছে ৭১টি। পাঁচটি সিডিতে ধারণ করে একটি সুদৃশ্য বাক্সে অ্যালবামটি বাজারে ছাড়া হবে ১৭ ডিসেম্বর। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সময়ের বিভিন্ন গান এতে সংকলিত হয়েছে। এমন আরও অনেক গান রয়েছে। গীতিকার ও সুরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় সেসব গান তাঁরা রেকর্ড করতে পারেননি। বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সম্পাদক শিল্পী বিশ্বজিৎ রায় ভবিষ্যতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, আইপিটিএর গান এভাবে আলাদা করে বিষয় ও সময়ভিত্তিক গণসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশের পরামর্শ দেন।
জাগরণের কার্যনির্বাহী সদস্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক গুরুত্ব দিলেন সরকারের দিকে না তাকিয়ে সামাজিক শক্তিগুলোকে এগিয়ে আসার প্রতি। এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কাজ রয়েছে। ঐতিহ্যের অনুগামী হয়ে সাংস্কৃতিক চেতনার মূলধারায় সেই কাজগুলো করতে হবে নিজেদের প্রয়োজনেই। জাগরণের গান-এর অ্যালবামের ধারাবাহিক প্রকাশনা তেমনই একটি কাজ।
জাগরণের গান-এর এই উদ্যোগে পাশে থাকার কথা বললেন এবিসি রেডিওর প্রধান নির্বাহী সানাউল্লাহ।
বাংলালিংকের জ্যেষ্ঠ বিপণন পরিচালক শিহাব আহমেদ জানান, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই গণসংগীতগুলোকে সাধারণ মানুষের আরও কাছে নিয়ে যেতে তাঁরা সহায়তা দেবেন। জাগরণের গান-এর চার অ্যালবামে ৩০০টি গান রেকর্ড করা হলো। আর ৬৫টি গান হলেই প্রতিদিন একটি করে নতুন গণসংগীত শুনতে পাবেন শ্রোতারা। প্রকাশনা অব্যাহত থাকবে এই আশাবাদ প্রকাশ করলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। গানের আঙ্গিক নিয়ে বললেন শিল্পী সোহরাব উদ্দীন।
গণসংগীতের দিকপাল সলিল চৌধুরী, সুখেন্দু চক্রবর্তী, শেখ লুৎফর রহমান, আবদুল লতিফ, আলতাফ মাহমুদ প্রমুখের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান তুলে ধরলেন একবিংশ শতকের বদলে যাওয়া নতুন সামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন আঙ্গিকের গণসংগীত রচনার প্রাসঙ্গিকতা। অতীতের গানগুলো সেই উত্তাল দিনের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। অনুপ্রাণিত করে, উদ্দীপনা জাগায়। তবে এখন জীবনে যে নতুন সংকট, জনমানসের যে নতুন মেধা, মনন, অভীপ্সার সৃষ্টি হয়েছে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নতুন গান করা যায় কি না, সে কথাই বলেছিলেন তিনি।
সভাপতি ছিলেন আইটিআইয়ের সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। তিনি চার বছর ধরে এই শ্রমসাধ্য কাজটি করার জন্য জাগরণের সবাইকে অভিনন্দন জানান। নতুন গান রচনা প্রসঙ্গে বললেন দুটি সমস্যার কথা। গণসংগীত রচনার জন্য গীতিকারের স্বল্পতা রয়েছে, পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরমতসহিষ্ণুতার অভাবও এ ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এর ভেতর দিয়েই মানুষের অদম্য শক্তিতে দেশ এগিয়ে চলেছে।
জাগরণের গান সেই অদম্য মানুষকে এগিয়ে যেতে শক্তি ও প্রেরণা জোগাবে—এই আশাবাদ নিয়েই শেষ হয়েছিল আয়োজন।
- প্রথম আলো, ৯ ডিসেম্বর ২০১২