বাবা রংপুর বেতারের শিল্পী। তবু মেয়েকে কিছুতেই গান করতে দেবেন না। মনের অতলে ব্যথা নিয়ে মেয়েটি বড় হতে থাকে। লুকিয়ে বেতারে শোনে আবদুল আলীমের গান। বড় হওয়ার পর বাবার হাত ধরেই একদিন তাঁর প্রিয় শিল্পীর বাসায় আসেন মেয়েটি। সময়টা ১৯৮৬ সাল। তত দিনে আব্দুল আলীম আর নেই। রয়েছে শুধু তাঁর গানের ভান্ডার। আব্দুল আলীমের স্ত্রীকে সাহস করে হঠাৎ মেয়েটি বলল, ‘চাচি, আমি চাচার গান গাইতে পারি। আপনাকে শোনাতে চাই।’ একে একে তিনটি গান শোনানোর পর উপহার জুটল আব্দুল আলীমের হারমোনিয়াম আর আশীর্বাদ। সেই মেয়েটিই আজকের দিলরুবা খান। লোকগানের বিখ্যাত শিল্পী।
ছিয়াশি সালে বেতারে অডিশন দিতে যান দিলরুবা খান। বিচারকের আসনে খোন্দকার নুরুল আলম। দিলরুবা গাইলেন আবদুল আলীমের গান। গান শুনে খোন্দকার সাহেব বললেন, ‘ছাইয়ের ভেতর আগুন।’
টেলিভিশনে অডিশন দিতে গিয়ে পরিচয় হলো সুরকার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজের সঙ্গে। একদিন তিনি দিলরুবাকে বললেন, টেলিভিশনের নাটকের জন্য একটা গান গাইতে হবে। নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টায় স্টুডিওতে গিয়ে হাজির দিলরুবা, কিন্তু শাহনেওয়াজ সাহেবের দেখা নেই! তিনি এলেন সন্ধ্যার পর। একই গান গাইলেন আরও দুজন। তবু দিলরুবার ডাক পড়ছে না। ততক্ষণে রাত ১১টা। একদলা কষ্ট দিলরুবার মনে চক্কর দিতে শুরু করেছে। সেই কষ্টটা ঢেলে দিলেন নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা ‘রেল লাইন বহে সমান্তরাল’ গানটিতে। টেলিভিশনে একদিন যখন নাটকটি প্রচারিত হওয়ার পর রজনীগন্ধা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে হাজার খানেক চিঠি এল। একটাই অনুরোধ, দিলরুবা খানের ‘রেল লাইন বহে সমান্তরাল’ গানটি প্রচার করতে হবে। এরপর তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৯৮৮ সালের থই থই বন্যায় একদিন গীতিকার আহমেদ কায়সারকে নিয়ে সুরকার আশরাফ উদাস এলেন দিলরুবা খানের বাড়িতে। একটা গান শোনালেন। গান শুনে দিলরুবা বললেন, ‘এইটা কী গান ভাই! রঙের ঘোড়া-টোড়া!’ আশরাফ উদাস আশ্বস্ত করলেন, গানটা অনেক ভালো হবে। সেই গান ‘পাগল মন’ বেতারে প্রচারিত হওয়ার পর পুরো দেশের শ্রোতাই যেন পাগল! তাঁর নামই হয়ে গেল পাগল মন দিলরুবা। এখনো মানুষ বলে, ওই যে পাগল মন যায়!
কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর (প্রয়াত) সহযোগিতায় প্রকাশ করা হলো প্রথম একক অ্যালবাম পাগল মন। মিলুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি, ‘মিলু ভাই শুধু শিল্পী নন, মানুষ হিসেবেও ছিলেন অনেক বড়।’
ওজন কমানোর জন্য ভুল ওষুধ খেয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে ১৯৯৫-২০০২ এই দীর্ঘ সময় তিনি ছিলেন গানের বাইরে। ধীরে ধীরে আবার গানে ফিরেছেন। এখন তাঁর ইচ্ছে, ১৫টি অ্যালবাম থেকে সেরা ১০টি গান বাছাই করে নতুন একটি অ্যালবাম প্রকাশ করবেন। কথা ও সুর ঠিক রেখে পুরোনো গানের নতুন মিউজিক করলে দোষের কিছু নেই। কিন্তু অনেকেই কথা ও সুরও বদলে ফেলছেন। দিলরুবা খান ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাঁর নিজের হাতে করা বাগান দেখাচ্ছিলেন। বারান্দায় টবে শত রকমের গাছ। হঠাৎ মিষ্টি গলায় কে যেন ভেতর থেকে ডেকে উঠল, ‘দিলরুবা, দিলরুবা কোথায় যাও?’ গলাটা ঠিক মানুষের মতো না। কিছুটা ধন্ধে পড়ে যাওয়ার মতো। দিলরুবা ভুল ভাঙালেন। জানালেন, এটা তাঁর পোষা ময়নার গলা! জানা গেল, পাখি পোষাও তাঁর শখ। ৮০ জোড়া কবুতর ছিল কিছুদিন আগেও। দিলরুবা খানের বারান্দায় লাগানো পান আর যষ্টিমধুর পাতা একসঙ্গে চিবুতে চিবুতে বিদায় নিচ্ছি; পেছনে ময়না ডেকেই চলেছে, ‘কোথায় যাও, কোথায় যাও!’
ছিয়াশি সালে বেতারে অডিশন দিতে যান দিলরুবা খান। বিচারকের আসনে খোন্দকার নুরুল আলম। দিলরুবা গাইলেন আবদুল আলীমের গান। গান শুনে খোন্দকার সাহেব বললেন, ‘ছাইয়ের ভেতর আগুন।’
টেলিভিশনে অডিশন দিতে গিয়ে পরিচয় হলো সুরকার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজের সঙ্গে। একদিন তিনি দিলরুবাকে বললেন, টেলিভিশনের নাটকের জন্য একটা গান গাইতে হবে। নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টায় স্টুডিওতে গিয়ে হাজির দিলরুবা, কিন্তু শাহনেওয়াজ সাহেবের দেখা নেই! তিনি এলেন সন্ধ্যার পর। একই গান গাইলেন আরও দুজন। তবু দিলরুবার ডাক পড়ছে না। ততক্ষণে রাত ১১টা। একদলা কষ্ট দিলরুবার মনে চক্কর দিতে শুরু করেছে। সেই কষ্টটা ঢেলে দিলেন নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা ‘রেল লাইন বহে সমান্তরাল’ গানটিতে। টেলিভিশনে একদিন যখন নাটকটি প্রচারিত হওয়ার পর রজনীগন্ধা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে হাজার খানেক চিঠি এল। একটাই অনুরোধ, দিলরুবা খানের ‘রেল লাইন বহে সমান্তরাল’ গানটি প্রচার করতে হবে। এরপর তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৯৮৮ সালের থই থই বন্যায় একদিন গীতিকার আহমেদ কায়সারকে নিয়ে সুরকার আশরাফ উদাস এলেন দিলরুবা খানের বাড়িতে। একটা গান শোনালেন। গান শুনে দিলরুবা বললেন, ‘এইটা কী গান ভাই! রঙের ঘোড়া-টোড়া!’ আশরাফ উদাস আশ্বস্ত করলেন, গানটা অনেক ভালো হবে। সেই গান ‘পাগল মন’ বেতারে প্রচারিত হওয়ার পর পুরো দেশের শ্রোতাই যেন পাগল! তাঁর নামই হয়ে গেল পাগল মন দিলরুবা। এখনো মানুষ বলে, ওই যে পাগল মন যায়!
কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর (প্রয়াত) সহযোগিতায় প্রকাশ করা হলো প্রথম একক অ্যালবাম পাগল মন। মিলুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি, ‘মিলু ভাই শুধু শিল্পী নন, মানুষ হিসেবেও ছিলেন অনেক বড়।’
ওজন কমানোর জন্য ভুল ওষুধ খেয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে ১৯৯৫-২০০২ এই দীর্ঘ সময় তিনি ছিলেন গানের বাইরে। ধীরে ধীরে আবার গানে ফিরেছেন। এখন তাঁর ইচ্ছে, ১৫টি অ্যালবাম থেকে সেরা ১০টি গান বাছাই করে নতুন একটি অ্যালবাম প্রকাশ করবেন। কথা ও সুর ঠিক রেখে পুরোনো গানের নতুন মিউজিক করলে দোষের কিছু নেই। কিন্তু অনেকেই কথা ও সুরও বদলে ফেলছেন। দিলরুবা খান ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাঁর নিজের হাতে করা বাগান দেখাচ্ছিলেন। বারান্দায় টবে শত রকমের গাছ। হঠাৎ মিষ্টি গলায় কে যেন ভেতর থেকে ডেকে উঠল, ‘দিলরুবা, দিলরুবা কোথায় যাও?’ গলাটা ঠিক মানুষের মতো না। কিছুটা ধন্ধে পড়ে যাওয়ার মতো। দিলরুবা ভুল ভাঙালেন। জানালেন, এটা তাঁর পোষা ময়নার গলা! জানা গেল, পাখি পোষাও তাঁর শখ। ৮০ জোড়া কবুতর ছিল কিছুদিন আগেও। দিলরুবা খানের বারান্দায় লাগানো পান আর যষ্টিমধুর পাতা একসঙ্গে চিবুতে চিবুতে বিদায় নিচ্ছি; পেছনে ময়না ডেকেই চলেছে, ‘কোথায় যাও, কোথায় যাও!’