• আমার গান
    • নতুন সংযোজন
    • হুমকির মুখে অডিও শিল্প
  • শিকড়ের গান
  • গানের গুনীজন
    • জন্ম ও মৃত্যু
    • জানেন কি?
  • গীতিকার সুরকার
  • সোনালী সময়ের গান
  • ..............
  • গানের গল্প
    • মা
    • দেশের গান
    • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি
    • সাবিনা ইয়াসমিনের দেশের গান
    • আজম খানের গানের গল্প
    • ভালোবাসার ১০টি চলচ্চিত্রের গান
    • বৃষ্টি নিয়ে গানের গল্প
    • আধুনিক
    • চলচ্চিত্র
    • ব্যান্ড >
      • মেলায় যাই রে
    • সমকালীন
  • গান কোষ
    • সঙ্গীত ম্যাগাজিন
    • সঙ্গীত স্মারক
    • ব্যান্ডের টি শার্ট
    • মিউজিক ক্যাফে
  • গান আর গান
    • উৎসবের গান
    • দিবসের গান
    • ঘটনার গান >
      • কবির সুমন
      • বিপ্লবের গানে আজম খান
      • ইমা খানের গান
    • নাটকের গান ও সূচনা সঙ্গীত >
      • নাটকের গানের এ্যালবাম
  • গানের খবর
    • জানুয়ারী ২০১৩
    • ডিসেম্বর ২০১২
    • নভেম্বর ২০১২
    • অক্টোবর ২০১২
    • সাক্ষাতকার
  • গানের আসর
    • প্রকাশনা উৎসব জানুয়ারী ২০১৩
    • প্রকাশনা উৎসব ডিসেম্বর ২০১২
    • জানুয়ারী ২০১৩
    • ডিসেম্বর ২০১২
    • নভেম্বর ২০১২
    • অক্টোবর ২০১২
    • টিভিতে গানের অনুষ্ঠান
  • গান কিনুন
  • ..............
  • শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
  • পপ ও ব্যান্ড সঙ্গীত
  • ..............
  • এ্যালবাম প্রকাশনা ২০১২
    • জুলাই ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম জুলাই >
        • অজিত রায়
        • সুজিত মোস্তফা - অনেক বৃষ্টি ঝরে
        • সঞ্চিতা দত্ত - হৃদয়ের পটে
        • তারিন - আকাশ দেব কাকে
        • সানী জুবায়ের - কেন মেঘের ছায়া
      • দেশাত্মবোধক
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • লোকগীতি
      • চলচ্চিত্রের গান
      • শ্রুতিনাটক
      • আধুনিক
      • ব্যান্ড
      • একক ও মিশ্র
      • ধর্মীয়
      • মিউজিক ভিডিও
    • আগষ্ট ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম আগষ্ট >
        • বাপ্পা - বেঁচে থাক সবুজ
        • পোশাক শিল্পীদের আমাদের গান
        • ভালোবাসি তোমাকে ২
        • পরস্পর ২
        • অপরাজিতা
        • এল.আর.বি - যুদ্ধ
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • আধুনিক >
        • দিলরুবা খান
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও >
        • দূরবীন
      • প্রামান্যচিত্র
      • ছোটদের গান
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
      • যুগল
      • মিশ্র
      • ধর্মীয়
      • মিউজিক ভিডিও
    • সেপ্টেম্বর ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম সেপ্টেম্বর >
        • বাদল দিনের পাখি - মিশ্র
        • জাগো বাংলাদেশ - পলিন
        • আবিদ শাহরিয়ার - হে বন্ধু হে প্রিয়
        • স্বপ্নের সীমানা
        • রানওয়ে
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • আধুনিক
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
    • অক্টোবর ২০১২ >
      • উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম অক্টোবর >
        • রাজীব খান - এক আলোতে
        • এল আর বি - যুদ্ধ
        • ওয়ারফেজ - সত্য
        • নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান
        • ব্যান্ড মিক্সড হাতিয়ার
        • তুমি সন্ধ্যাদীপের শিখা
        • Exploring Tagore with Piano
        • ভোরের শুকতারা
      • নজরুল
      • রবীন্দ্র
      • লোক সঙ্গীত
      • যন্ত্র সঙ্গীত ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
      • আবৃত্তি
      • আধুনিক
      • চলচ্চিত্রের গান ও ভিডিও
      • ব্যান্ড
      • একক - নারী
      • একক - পুরুষ
      • মিশ্র
      • আন্তর্জাতিক প্রকাশনা
      • ধর্মীয়
    • নভেম্বর ২০১২
    • ডিসেম্বর ২০১২ >
      • তারেক মাসুদের গান
      • দেশাত্মবোধক >
        • জাগরনের গান ৪
      • শাস্ত্রীয়
      • লোক সঙ্গীত
      • নজরুল ও রবীন্দ্র
      • আবৃত্তি
      • ছোটদের গান
      • ১২.১২.১২ এ্যালবাম
      • চলচ্চিত্রের গান ও ডিভিডি
      • একক নারী
      • একক পুরুষ
      • মিশ্র
      • ব্যান্ড
      • মিউজিক ভিডিও
    • সালতামামি ২০১২
    • সঙ্গীতাঙ্গনের সাত সতেরো ২০১২
  • এ্যালবাম প্রকাশনা ২০১৩
  • আঞ্চলিক প্রকাশনা
  • প্রবাসী প্রকাশনা
    • ডিস্কো রেকর্ডিং
  • আন্তর্জাতিক প্রকাশনা
  • শিক্ষামুলক প্রকাশনা
  • ..............
  • আমাদের কথা
    • আমাদের শ্লোগান
    • আমাদের প্রতীক ও ব্যানার
    • আমাদের শিরোনাম সঙ্গীত
    • আমাদের অন্যান্য সাইট
  • Untitled

ভালোবাসার ১১টি চলচ্চিত্রের গান
গত চার দশকে বাংলা চলচ্চিত্রের অসংখ্য কালজয়ী ভালোবাসার গান রয়েছে। শ্রোতাপ্রিয় তেমনি ১১টি ভালোবাসার গানের শিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের সঙ্গে কথা বলে গানগুলোর নেপথ্য গল্প লিখেছেন কবির বকুল


Picture


তুমি আসবে বলে ভালোবাসবে বলে
চলচ্চিত্রঃ সুতরাং (১৯৬৪) । পরিচালনাঃ সুভাস দত্ত
শিল্পী: আঞ্জুমান আরা বেগম
গীতিকার: সৈয়দ শামসুল হক
সুরকার: সত্য সাহা

এই গানটি সুতরাং চলচ্চিত্রের। পরিচালক সুভাষ দত্ত। এ গানের গীতিকার সৈয়দ শামসুল হক বলেন, তখন আমার বয়স ২৭ পুরো হয়নি। এ ছবির চিত্রনাট্য আমারই লেখা। কবি হিসেবে তখন আমি পরিচিতি পেয়ে গেছি। তবে গান লিখতে হবে এটা কখনও ভাবিনি। সুতরাং ছবির বাজেট কম। তাই দত্ত (সুভাষ দত্ত) আর সত্য (সত্য সাহা) মিলে আমাকে ধরল, এ ছবির গানও লেখার জন্য। আমি তখন চিত্রালী পত্রিকায় কাজ করি। সত্য সাহা তখন থাকত ফরাশগঞ্জে একটা মেসে। মনে পড়ে, এক বিকেলে সেই বাড়ির তিনতলার চিলেকোঠায় বসে প্রথম এ গানের চার লাইন লিখি। সত্য ওই চার লাইনের প্রথম সুর করে। তারপর বাকি গানটুকু লিখি। দত্ত আর সত্য মিলেই এ গানের জন্য আঞ্জুমান আরাকে নির্বাচন করে। এ ছবির বাকি গানগুলোও পরে আমাকে লিখতে হয়েছে।

Picture
এইচ এম ভি ১৯৬৮


ফুলের কানে ভ্রমর এসে
চলচ্চিত্রঃ পিচ ঢালা পথ (১৯৭০)
পরিচালনাঃ এহতেশাম
শিল্পীঃ শাহনাজ রহমতুল্লাহ
গীতিকারঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
সুরকারঃ রবিন ঘোষ

কালজয়ী এ গানটি এহতেশামের পিচ ঢালা পথ চলচ্চিত্রের। গানটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই গানের শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ কিছুক্ষণ সময় নেন। তারপর স্মৃতি হাতড়ে বলেন, সম্ভবত এই গানটি রেকর্ড হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। তখন আমার বয়স ১৬ বছর। এফডিসির রেকর্ডিং স্টুডিওতে গানটি গাই। এটি ছিল চলচ্চিত্রে আমার ৩ নম্বর গান। একটু না বললেই নয়, আমার প্রথম গানটি ছিল নতুন সুর ছবিতে। দাদারই (রবিন ঘোষ) সুর করা। ওই গানের মূল শিল্পী ছিলেন ফেরদৌসী রহমান। আমি কোরাস কণ্ঠে তাঁর পেছনে গেয়েছিলাম। গানটি ছিল ‘সি এ টি ক্যাট, ক্যাট মানে বিড়াল’।
যা-ই হোক, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’ গানটি গাওয়ার সময় দাদা আমাকে বেশ কিছু টিপস দিয়েছিলেন। যেমন গানের একটি লাইন ‘চুপি চুপি বলে যায়’; দাদা বললেন, এই লাইনটি গাইতে হবে ভেতর থেকে পুরো আবেগ দিয়ে। যন্ত্রশিল্পীদের নিয়ে মেলোডিনির্ভর এ গানটির লাইভ রেকর্ডিং হয়েছিল।



একি সোনার আলোয়
জীবন ভরিয়ে দিলে
চলচ্চিত্রঃ মনের মত বউ (১৯৬৯)
পরিচালনাঃ রহিম নেওয়াজ
শিল্পী: সাবিনা ইয়াসমীন
গীতিকার ও সুরকার: খান আতাউর রহমান

রহিম নেওয়াজ পরিচালিত মনের মত বউ ছবির গান এটি। এ গানের শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন স্মৃতি হাতড়ে বলেন, এ গানটি তো একটি ইতিহাস। আমার জীবনে যত অনুষ্ঠান করেছি, প্রায় সবগুলোতেই এ গানটি আমাকে গাইতেই হয়। প্রথম এই গানটি যখন আমি গাই, তখন আমার বয়স অনেক কম। ইতিমধ্যেই খান আতাউর রহমান, আলতাফ মাহমুদের সুরে আমি চলচ্চিত্রে বেশ কিছু গান গেয়ে ফেলেছি।
গানের অনেকগুলো বিষয় এই দুজনার কাছ থেকে আমি শিখেছি। বিশেষ করে আতা ভাইয়ের কাছে শিখেছি শব্দের উচ্চারণ, গায়কি—এগুলো। ‘একি সোনার আলোয়’ গানটি লাইভ রেকর্ডিং, এফডিসিতে করা। মনে আছে, গানটি গেয়ে যখন আমি বেরিয়ে এলাম, তখন আতা ভাই কেঁদে ফেললেন। তাঁর কান্না দেখে আমিও কেঁদে ফেলি। কাঁদতে কাঁদতে বলি, আমি বোধ হয় ভালো গাইতে পারিনি। তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘রোজী (ডাকনাম), তুই অসাধারণ গেয়েছিস।’ ছবিতে গানটি দুবার ব্যবহার করা হয়। একবার সুচন্দার লিপে, একবার সুলতানা জামানের লিপে। তবে এই গানের পেছনে যে ঘটনাটা কেউ জানে না, সেটাই বলি। গানটি গাওয়ার কয়েক দিন পর আবার এফডিসিতে গিয়েছি অন্য একটি ছবির গান গাইতে। পাশেই তখন এই গানটির শুটিং হচ্ছিল। হঠাৎ আমাকে সেখানে ডেকে নিয়ে গেলেন আতা ভাই। বললেন, গানটির যন্ত্রানুষঙ্গে পিয়ানোর যে পিস আছে, সেটা ছবিতে আমাকেই বাজাতে হবে। শুনে আমি তো অবাক। বললাম, আমি তো পিয়ানো বাজাই না। তিনি বললেন, ‘ছবির নায়িকা গানের শিল্পী নয়, সে বাজালে রিয়েলিস্টিক মনে হবে না। বরং তুই বাজালেই সত্যিকারের মনে হবে।’ আমি আতা ভাইয়ের কথা ফেলতে পারলাম না। তখন আমার দুটো হাত মেকআপ করানো হলো। ছবির ধারাবাহিকতার জন্য নায়িকা সুলতানা জামানের আঙুল থেকে আংটি খুলে আমার আঙুলে পরানো হলো। এবং আমার পিয়ানো বাজানো ধারণ করা হলো। ছবিতে পিয়ানো বাজাতে দর্শক যে দুটি হাত দেখেন, তা আমারই।


Picture
স্বরলিপি ১৯৮০


আমার মন বলে তুমি আসবে
চলচ্চিত্রঃ আনারকলি (১৯৮০)
পরিচালনাঃ দিলীপ বিশ্বাস

শিল্পী: রুনা লায়লা
গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার
সুরকার: সত্য সাহা

গানটি আনারকলি চলচ্চিত্রের। পরিচালক দিলীপ বিশ্বাস। এ গানের শিল্পী রুনা লায়লা বলেন, এটি আমার গাওয়া ভালো কিছু গানের মধ্যে মনে রাখার মতো একটি গান। একটু ক্লাসিক্যাল ধাচের এ গানটি আমার খুবই প্রিয়। মনে আছে, শ্রুতি রেকর্ডিং স্টুডিওতে এই গানটি রেকর্ড হয়েছিল। এর বেশি কিছু মনে নেই।
গানের গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, আনারকলি আমার প্রযোজনা সংস্থা দেশ কথাচিত্র থেকে নির্মিত। গানটি প্রয়াত সত্য সাহার বাড়িতে বসেই লেখা এবং সুর করা হয়েছিল। ববিতা ঠোঁট মিলিয়েছিলেন গানটিতে। ছবির প্রেক্ষাপট ছিল এমন—আনারকলি (ববিতা) যখন সেলিমকে (রাজ্জাক) পাচ্ছিল না, তখন নিঃসঙ্গ বা একাকিত্ব থেকে এই গানটি গায়। আনারকলি কল্পনায় দেখে, সেলিম তার কাছে আসছে। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়।


ভালোবাসার মূল্য কত
চলচ্চিত্রঃ এপার ওপার । পরিচালনাঃ মাসুদ পারভেজ
শিল্পী ও সুরকারঃ আজাদ রহমান
গীতিকারঃ ফজল এ খোদা

Picture
ঢাকা রেকর্ড ১৯৭৪
মাসুদ পারভেজ পরিচালিত এপার ওপার ছবির গান এটি। রেকর্ড হয় ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে, এফডিসিতে। গানটির সুরকার ও শিল্পী আজাদ রহমান বলেন, আমি তখন রেডিওতে চাকরি করি। থাকি ইস্কাটন গার্ডেন রোডের সরকারি কোয়ার্টারে। ওই বাড়িতেই এই গানটির সৃষ্টি। গানটি ছবির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী লেখা হয়েছিল। কবি ফজল এ খোদা লিখেছিলেন। আগে ছবির গানগুলো গীতিকার, ছবির পরিচালক, কাহিনিকার—সবাই একসঙ্গে বসে তৈরি করতাম। একটু না বললেই নয়, আমার অনেক গানই আগে সুর করা, পরে সুরের ওপর কথা বসানো। তবে ‘ভালোবাসার মূল্য কত আমি সে তো বুঝি না’—এ গানটির কিছু অংশ আগে লেখা, আংশিক সুরের ওপর। গানটি পুরো তৈরি হওয়ার পর কে গাইবেন—কথা উঠল। ছবির পরিচালক মাসুদ পারভেজ (নায়ক সোহেল রানা) চাইলেন, গানটি আমিই গাই। তিনি বললেন, আপনার কণ্ঠেই গানটি শুনতে ভালো লাগছে। যেহেতু আমি নিজেও শিল্পী, তাই গাইলাম। এই ছবির ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’ গানসহ আরও দুটি গান ছবিতে গেয়েছিলাম।

তোমারই পরশে জীবন 
চলচ্চিত্রঃ অংশীদার (১৯৮১) । পরিচালনাঃ দিলীপ বিশ্বাস
শিল্পীঃ সুবীর নন্দী ও সাবিনা ইয়াসমীন
গীতিকারঃ গাজী মাজহারুল আনোয়ার
সুরঃ সত্য সাহা

গানটি দিলীপ বিশ্বাসের অংশীদার ছবির। ১৯৮১ সালে গানটি শ্রুতি রেকর্ডিং স্টুডিওতে ধারণ করা হয়েছিল। সুবীর নন্দী স্মৃতিচারণা করে বললেন, ওই সময় আমার খুব পান খাওয়ার অভ্যাস ছিল। রেকর্ডিংয়ের সময় আমার ‘র’ উচ্চারণটি ঠিকমতো হচ্ছিল না। বেশ কটি টেক নেওয়ার পরও গানটি ‘ওকে’ হচ্ছিল না। একপর্যায়ে খুব রেগে গেলেন সুরকার প্রয়াত সত্য সাহা। বললেন, ‘সুবীর, তোমাকে কতবার বললাম পান খাওয়া ছেড়ে দিতে। জিহবা ভারী হয়ে যায়।’ আমি কিছুটা লজ্জিত হয়েই একটু বিরতি নিলাম। প্রডাকশনের একজনকে ডেকে বললাম একটা টুথপেস্ট আর একটা টুথব্রাশ নিয়ে আসতে। পেস্ট আর ব্রাশ নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে গেলাম। তারপর ভালো করে জিহবা ব্রাশ করে ফিরলাম এবং আবার গানটি গাইতে দাঁড়ালাম। এবার ‘র’-এর উচ্চারণ পরিষ্কার হলো এবং গানটি সত্যদার মনমতো গেয়ে ফেললাম। পরে গাইলেন শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। ওই দিন থেকে সেই যে পান খাওয়া ছেড়েছি আর কোনো দিন পান খাইনি।

আমি আছি থাকব ভালোবেসে মরব
চলচ্চিত্রঃ সুন্দরী (১৯৭৯) । পরিচালনাঃ আমজাদ হোসাইন
শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমীন
গীতিকারঃ আমজাদ হোসেন । সুরকারঃ আলাউদ্দিন আলী

Picture
গীত বিতান ১৯৭৯
এই গানটি আমজাদ হোসেন পরিচালিত সুন্দরী চলচ্চিত্রের। এ গানের সুরকার আলাউদ্দিন আলী বলেন, আমজাদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রতিটি কাজই প্রশংসিত। সেটা চলচ্চিত্রই হোক, আর গানই হোক। তিনি আমার সুরে বেশ কিছু গান লিখেছেন, প্রায় প্রতিটি গানই শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে। ‘আমি আছি থাকব’ তেমনি একটি গান। ছবির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী গানটি তৈরি করা। এ গানটি করতে আমজাদ ভাইয়ের সঙ্গে চার-পাঁচ দিন বসতে হয়েছে। গানের স্থায়ীটুকু লিখতেই লেগেছে দুই দিন। ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিওতে গানটির রেকর্ডিং হয়েছিল। ছবিতে দেখা যায়, ববিতা গানটি করছেন। রোমান্টিক এই গানটির সঙ্গে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন তালে তালে লাঠি খেলছেন।
বলাবাহুল্য, আমার সুরে, আমজাদ ভাইয়ের লেখা আরও কিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে, তার মধ্যে ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’, ‘বাবা বলে গেল আর কোনো দিন গান কোরো না’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘ভালোবাসি বলিব না আর’, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না’, ‘হায়রে কপাল মন্দ’, ‘কত কাঁদলাম কত গো সাধলাম’, ‘আমার কোনো চাওয়া নাই’।



চাঁদের সাথে আমি দেব না
চলচ্চিত্রঃ আশীর্বাদ
পরিচালকঃ তমিজ উদ্দিন রিজভি
শিল্পীঃ রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোর
গীতিকারঃ সৈয়দ শামসুল হক
সুরকারঃ আলম খান

এই গানটি আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের। পরিচালক তমিজ উদ্দিন রিজভি। গানটির সুরকার আলম খান বলেন, আমার জানামতে, এটি চলচ্চিত্রে সৈয়দ শামসুল হকের লেখা শেষ গান। এরপর আর তিনি গান লিখেননি। তিনি আমার সুরে বেশ কিছু গান লিখেছিলেন (‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘তোরা দেখ দেখ দেখরে চাহিয়া’, ‘আমি চক্ষু দিয়া দেখতেছিলাম জগৎ রঙিলা’, ‘কারে বলে ভালোবাসা কারে বলে প্রেম’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘চাম্বেলিরও তেল দিয়া কেশ বাইন্ধাছ’)। এই ছবির জন্য হক ভাইয়ের কাছে আমি একটি রোমান্টিক গান চেয়েছিলাম। সাধারণত ছবির গান নিয়ে হক ভাইয়ের গুলশানের বাসায়ই সিটিং দিতাম। তো, হক ভাই ফোনে জানালেন, গান রেডি। তাঁর বাড়িতে গেলাম পরিচালকসহ। তিনি আমার হাতে ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’ গীতিকবিতাটি তুলে দিয়ে বললেন, আলম, তুমি আমাকে একটি প্রেমের গান লিখতে বলেছিলে, সচরাচর যে রকম প্রেমের গান হয়, সে রকম নয়, একটু উল্টো করে বলার চেষ্টা করেছি আমি। তারপর গীতিকবিতাটি সুর করি। এই গানটি শ্রুতিতে লাইভ রেকর্ডিং হয়েছিল। ১২ থেকে ১৫টা টেকে গানটি রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে ধারণ করি।

এই মন তোমাকে দিলাম
চলচ্চিত্রঃ মানসী । পরিচালকঃ ফখরুল হাসান বৈরাগী
শিল্পী: সাবিনা ইয়াসমীন
গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার
সুরকার: আনোয়ার পারভেজ

এই গানটি মানসী চলচ্চিত্রের। পরিচালক ফখরুল হাসান বৈরাগী। ছবিতে নায়িকা রোজিনা গানটিতে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন। গানটির শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, মানসী ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হওয়ায় গানটিও প্রথমে শ্রোতাদের কান পর্যন্ত যায়নি। পরে বিটিভিতে এই গানটি করার পর বেশ জনপ্রিয় হয়। এই গানটি নিয়ে একটি মজার ঘটনা রয়েছে। গানটি প্লেব্যাক করার পর আমি কোনো সম্মানী পাইনি। সুরকার আনোয়ার পারভেজ আমাকে দেখলেই বলতেন, রোজী (ডাকনাম), বেটা প্রযোজক পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ জন্য পেমেন্ট দিতে পারছি না। শিগগিরই পেয়ে যাবে। একদিন ঠিকই পারভেজ ভাই পেমেন্ট নিয়ে বাসায় এলেন। জানতে চাইলাম, কীভাবে আদায় করলেন। তিনি বললেন, আজ খুব সকালে প্রযোজকের বাসায় গিয়ে হাজির। বাড়ির সামনে একটি গাছ আছে, সেই গাছের ওপর চড়ে বসে রইলাম। তারপর ওই ব্যাটা ঘর থেকে বের হওয়া মাত্র তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়লাম। আর যায় কই। টাকা আদায় করে তবেই ফিরলাম।


তুমি যেখানে আমি সেখানে
চলচ্চিত্রঃ নাগ পূর্ণিমা (১৯৮০)
পরিচালকঃ মাসুদ পারভেজ
শিল্পীঃ এন্ড্রু কিশোর
গীতিকারঃ মনিরুজ্জামান মনির
সুরকারঃ আলম খান

এই গানটি নাগ পূর্ণিমা চলচ্চিত্রের। পরিচালক মাসুদ পারভেজ। সুরকার আলম খান বলেন, সাপের কাহিনি নিয়ে নির্মিত হলেও ছবির এই একটি গান ছিল অনেকটা নিরীক্ষাধর্মী। বেশ চওড়া সুর হলেও গানটি এন্ড্রু কিশোরকে দিয়ে গাওয়াতে হয়। কারণ, ছবির নায়ক সোহেল রানার লিপে প্রতিটি গানই ছিল এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে। তাই গানটি যখন কিশোর তুলতে এল, তখন শুনেই বলল, সুরের একটি পর্দা নামিয়ে দিলে তাঁর জন্য গাইতে আরাম হয়। কিন্তু সোহেল রানা কিছুতেই রাজি নন। তিনি বললেন, চওড়া সুরেই গাইতে হবে। শেষ পর্যন্ত ওই অকটেভেই কিশোরকে গাইতে হয়। শিল্পী এন্ড্রু কিশোর বলেন, প্রায় ৩০টি টেক দেওয়ার পর গানটি ‘ওকে’ হয়। কিন্তু এতবার গাওয়ার ফলে গলা ব্যথা হয়ে যায়। প্রায় এক সপ্তাহ আর গান গাইতে পারিনি।

Picture
গীত বিতান ১৯৮৫

আমার বুকের মধ্যিখানে
চলচ্চিত্রঃ নয়নের আলো (১৯৮৫)
পরিচালকঃ বেলাল আহমেদ
শিল্পীঃ এন্ড্রু কিশোর ও সামিনা চৌধুরী
গীতিকার ও সুরকারঃ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

নয়নের আলো ছবির গান এটি। পরিচালক বেলাল আহমেদ। এ ছবির সবগুলো গান সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ‘আমার বুকের মধ্যিখানে’ গানটির প্রসঙ্গ তুলতেই স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, আমার পূর্ণাঙ্গ সংগীত পরিচালনায় প্রথম ছবি ছিল নয়নের আলো। মনে পড়ে, ওই সময় এক জ্যোতিষ আমার হাত দেখে বলেছিলেন, তোমার তো গিটারের হাত। এ হাতে সুর হবে না। কিন্তু আমি তাঁর কথা মেনে নিতে পারিনি। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে তখন আমাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। প্রায় ১০০ জনকে শুনিয়ে জানতে হয়েছিল, এটি গান হয়েছে কি না। এমনকি, ছবির স্ক্রিপ্ট পড়ার সময় যেখানে গানের সিকোয়েন্স, সেখানে নিজের কণ্ঠে গাওয়া গান টেপরেকর্ডারে চালিয়ে শোনাতে হতো। সবাই যখন বলতেন ‘ওকে’ তারপর রেকর্ডিংয়ে যেতে হয়েছে।
যা-ই হোক, সংগীত পরিচালক হিসেবে প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি করছি। তখন সৈয়দ আবদুল হাদী, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন প্লেব্যাকে ভীষণ ব্যস্ত। স্বপ্ন ছিল, আমার গানগুলো বড় মাপের শিল্পীদের দিয়ে গাওয়াব। কিন্তু আমার ছবির প্রযোজক বললেন, আপনি নতুন, বাজেট কম। তাই নতুন শিল্পী দিয়েই গানগুলো করেন। অগত্যা তখন এই গানটি এন্ড্রু কিশোর আর সামিনা চৌধুরীকে দিয়ে গাওয়াই। ছবিতে গানটি ঠোঁট মেলান জাফর ইকবাল ও কাজরী। ছবির বাকি গানগুলোও এই দুজন শিল্পীই গেয়েছিলেন। সবগুলো গানই তখন ভীষণ জনপ্রিয় হয়। বিশেষ করে ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘আমি তোমার দুটি চোখে দুটি তারা হয়ে থাকব’, ‘এই আছি এই নাই দু দিন পরে কেউ বা ধুলো কেউ বা হব ছাই’ গানগুলো।

Powered by Create your own unique website with customizable templates.